ভারতের পালানোর চেষ্টা করেছিলেন রাউজানের (চট্টগ্রাম-৬) সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী। তাকে অবৈধভাবে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহায়তা করেছিলেন মো. হান্নান মোল্লা (৪৫) ও মো. নাঈম চৌধুরী (২২) নামের দুই ব্যক্তি।
আটক নাঈম মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য।
তবে তাদের সেই চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবির হাতে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম নিজেই।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গাজীরবাজার এলাকার আব্দুল্লাহপুর সীমান্ত থেকে ফজলে করিমকে আটক করা হয়।
এদিন সকালে সেই তথ্য জানিয়ে বিজিবি সদর দপ্তর থেকে জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গাজীরবাজার এলাকার আব্দুল্লাহপুর সীমান্ত থেকে ফজলে করিমকে আটক করা হয়।
এছাড়াও তাকে সাহায্যকারী উপজেলার নূরপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার মো. হান্নান মোল্লা ও মানব পাচারকারী মো. নাঈম চৌধুরীকে আটক করা হয়।
আটকের সময় সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিমের কাছ থেকে বাংলাদেশি লাল পাসপোর্ট ১টি, নগদ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা, মোবাইল ফোন ২টি (আইফোন- ১টি এবং রিয়ালমি-১টি), জাতীয় পরিচয়পত্র- ২টি (স্মার্ট ও পুরাতন) এবং ছবি ও ওষুধসহ অন্যান্য কাগজপত্র পাওয়া যায়।
এছাড়া সহযোগী সাবেক মেম্বার হান্নান মোল্লার কাছ হতে মোবাইল ফোন ২টি, নগদ ২ হাজার ৩৯০ টাকা এবং মানব পাচারকারী নাঈমের কাছে একটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪৩০ টাকা পাওয়া যায়।
সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মেম্বার এবং মানব পাচারকারীকে আখাউড়া থানায় সোপর্দ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে বিজিবির জিজ্ঞাসাবাদে সাবেক সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, মানব পাচারকারী মো. নাঈম ভারতে প্রবেশ করিয়ে দেবে বলে ফজলে করিমকে মোবাইল ফোনে জানায়। তখন তিনি ঢাকা হতে বাসযোগে আখাউড়ায় আসেন। সাবেক মেম্বার হান্নান মোল্লার সহযোগিতায় ও মানব পাচারকারী নাঈমের মাধ্যমে এই সাবেক সংসদ অবৈধভাবে ভারতে যাচ্ছিল। চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন বলে বিজিবিকে অবহিত করেন তিনি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন রাউজানের (চট্টগ্রাম-৬) সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও রাউজানে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ সন্তান ফারাজ করিম চৌধুরী। মানবিক কর্মকাণ্ড করে ফারাজ দেশব্যাপী সুনাম কামিয়েছেন। কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন তার অবস্থান নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এ থেকে মুক্তি পেতে তিনি তার মা রিজওয়ানা ইউসুফকে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি লাইভ ভিডিও করান। সেটিও সমালোচনার শিকার হয়।