• ২রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

আখালিয়ার ঘটনায় দুই মামলা, একটির আসামি ৩০০

risingsylhet.com
প্রকাশিত আগস্ট ৮, ২০২৩
আখালিয়ার ঘটনায় দুই মামলা, একটির আসামি ৩০০

আখালিয়ার ঘটনায় দুই মামলা, একটির আসামি ৩০০

আখালিয়ার ঘটনায় দুই মামলা, একটির আসামি ৩০০।

আখালিয়া এলাকার ধানুহাটারপাড়স্থ আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে কুরআন শরিফ পুড়ানোর ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি পবিত্র কুরআন পুড়ানো এবং অপরটি পুলিশে কাজে বাধা প্রদান এবং হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে।

প্রথম মামলার বাদী হয়েছেন কোতোয়ালি থানার এস.আই রাশেদ ফজল ও দ্বিতীয়টির বাদী এস.আই অঞ্জন কুমার দেবনাথ।
এসব তথ্য জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।ওসি আরও জানান- প্রথম মামলায় গ্রেফতার দেখানো তিন আসামিকে দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন,প্রথম মামলায় তিনজনকে এবং দ্বিতীয়টিতে ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত নুরুর রহমান সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মৃত ফজুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে তিনি কোতোয়ালি থানাধীন আখালিয়া তপুবন এলাকার সরু মিয়ার বাসায় বসবাস করছেন। নুরুর রহমান ছাত্রজীবনে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। বর্তমানে তিনি জৈন্তাপুর মাদ্রাসা সিলেটে ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক। পাশাপাশি আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

নুরুর সঙ্গে থাকা মাহবুব আলম ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানাধীন বাউলাপাড়া এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে। তিনি বর্তমানে কোতোয়ালি থানাধীন আখালিয়া ধানুহাটারপাড় এলাকায় বসবাস করছেন। মাহবুবও ছাত্রজীবনে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ঘটনার সময় একটি ব্যক্তিগত কাজে নুরুর সঙ্গে দেখা করতে এসে ফেঁসে যান তিনি।

আর গ্রেফতারকৃত তৃতীয়জন- ইসহাক আহমদ সিলেটের জালালাবাদ থানাধীন ফতেহপুর মাদ্রাসার শিক্ষক ও আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের খন্ডকালীন শিক্ষক। সিলেট বেতারের ক্বারিও তিনি। ইসহাক রবিবার বিকেলে নুরুর রহমানের কাছে এক কার্টুন নতুন ও এক বস্তা ভর্তি পুরাতন কুরআন শরিফ নিয়ে এসে নতুনগুলো ছাত্রদের মাঝে বিতরণ এবং পুরাতনগুলো পুড়িয়ে ফেলতে বলেন।

তার কথার প্রেক্ষিতেই নুরুর রহমান রবিবার রাতে পবিত্র কুরআনের ৪৫টি কপি কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে ফেলেন। এসময় বিষয়টি স্থানীয় দেখে ফেলেন এবং জানাজানি হয়ে গেলে কয়েক হাজার উত্তেজিনত জনতা আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ফটকে এসে জড়ো হয়ে নুরুর রহমানকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে নুরুর রহমান ও মাহবুবকে প্রতিষ্ঠানটির একটি কক্ষে আটকে করে ক্ষুব্দ জনতার হাত থেকে রক্ষা করে। এসময় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।

গত রবিবার (৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে ধানুহাটারপাড়স্থ সিলেট আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নুরুর রহমানের (৫০) বিরুদ্ধে পবিত্র কুরআনের ৪৫টি কপি কেরোসিন ঢেলে পুড়ানোর অভিযোগ উঠে। ঘটনার পর তাকে এবং তার সঙ্গে থাকা মাহবুব আলম (৪৫) নামে একজনকে আটক করে পুলিশ।

এছাড়া সোমবার বিকালে সিলেটের টুকেরবাজার থেকে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের খন্ডকালীন শিক্ষক ইসহাক আহমদকে আটক করে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-৯ এর একটি টিম। পরে সোমবার রাতে পবিত্র কুরআন পুড়ানোর অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।

এসময় উত্তেজিনত জনতার একাংশ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। উত্তেজিনত জনতা এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে। এতে অন্তত ২০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এছাড়া পুলিশের কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করেন উত্তেজিত জনতা।

রাত সাড়ে ১২টার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাধ্য হয়ে ফাঁকা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। পরে ধীরে ধীরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন উত্তেজিত স্থানীয় জনতা। রাত ২টার দিকে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে পুলিশ।

১১ বার পড়া হয়েছে।