 
কোম্পানীগঞ্জে পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচী চলাকালে পর্যটকদের বহনকারী ৫ টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট–কোম্পানীগঞ্জ–ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের থানাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করেছে। সড়ক অবরোধ করে পাথর শ্রমিকরা এ গাড়ি গুলো ভাঙচুর করে বলে জানা গেছে। এতে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, সিলেটের পাখর কোয়ারি চালুর দাবিতে টানা আন্দোলন করছেন সিলেট জেলা পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। তাদের মঙ্গলবার কোম্পানীগঞ্জে ‘গণ অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করা হয়। দুপুর ১২ টায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বালু-পাথর শ্রমিকদের নিয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে এ কর্মসূচী শুরু হয়।
এই কর্মসূচি শেষে বেলা ২ টায় আন্দোলনকারীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-টুকেরবাজার সড়কে আসেন। এসময় তাদের হাতে লাটি-সোটা, বাঁশসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র ছিলো। তারা সড়ক অবরোধ করে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা সড়ক মারমুখী হয়ে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী একটি বাস, ২টি প্রাইভেট কার, ২টি সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। এরপর আন্দোলনকারীরা সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-টুকেরবাজার সড়কে দীর্ঘ দেড় ঘন্টা অবস্থান নেন।
আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় আরও কিছু গাড়ি দ্রুত ঘুরিয়ে আবার ফিরতি পথে চলে যায়। পরবর্তীতে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হামলাকারী ২ জনকে আটক করে নিয়ে যায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর ২টি প্লাটুন ও কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল মোতায়েন করা হয়। ভাঙচুরের পরপরই আমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে লাইভ করেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, তিনি পরিবার–পরিজন নিয়ে পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর যাচ্ছিলেন। পথে অতর্কিতভাবে তার প্রাইভেট কারে হামলা চালিয়ে কাচ ভাঙচুরের পাশাপাশি পুরো গাড়িটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। গাড়ির ভাঙচুর হওয়া কাচ ভেতরে থাকা যাত্রীদের শরীরেও বিদ্ধ হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, দুপুর সোয়া দুইটার দিকে একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তারা তাৎক্ষনিক দু’জনকে আটক করেছেন। তবে কোনো মামলা হয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে তারা আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এরআগে ১৪ জুন প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ সময় দুই উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করে পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়েরের পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, ওইদিন পরিদশূন শেষে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংসহ সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি ভবিষ্যতে ইজারা দেওয়া হবে না। অন্যদিকে অবৈধ পাথরের ব্যবসা ঠেকাতে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দ্রুততার সঙ্গে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে থাকা পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। দুই উপদেষ্টার নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই ১৬ জুন থেকে পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন।
 
 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                 
                                 
                                 
                                