আমরা নিজের হাতে আইন তুলে নেব না: ডা. শফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে দলের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তারা প্রতিশোধ নেবেন না বলে যে কথাটি বলেছেন, তার অর্থ এই নয় যে অপরাধের বিচার হবে না। যিনি সুনির্দিষ্ট অপরাধ করেছেন তার বিরুদ্ধে মামলা হবে এবং তাকে শাস্তি পেতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত সরকার ক্ষমতার লোভ-জেদের বশবর্তী হয়ে সুস্পষ্ট গণহত্যা চালিয়েছে। সরকার শুধু স্থলভাগেই নয়, আকাশ থেকেও গুলি চালিয়ে নিজ দেশের নাগরিকদের হত্যা করেছে। স্বাধীন দেশে এই গণহত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানাই, খুনিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
জামায়াতের আমির বলেন, দল হিসেবে সাড়ে ১৫ বছর আমাদের সঙ্গে বৈরী আচরণ করা হয়েছে। আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। শেষ মুহূর্তে সরকার দিশেহারা হয়ে আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা বলেছি আমরা প্রতিশোধ নেব না—এর মানে হচ্ছে আমরা নিজের হাতে আইন তুলে নেব না। কিন্তু যিনি সুনির্দিষ্ট অপরাধ করেছেন- তার বিরুদ্ধে মামলা হবে এবং তাকে শাস্তি পেতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে এবং গত সাড়ে ১৫ বছরে যেসব অপরাধ করা হয়েছে তার বিচার করতে হবে।
জামায়াতের আমির আরও বলেন, আমরা আমাদের সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি—ক্ষতিগ্রস্ত যারাই মামলা করবেন, আইনের আশ্রয় নেবেন- কোনো মানুষের ওপর যেন বেইনসাফি না হয় সেদিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখতে হবে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে যেন আসামি করা না হয়।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, দেশের কিছু চতুর ধনী মানুষ জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন করে ব্যাংকগুলো ফোকলা করে বিদেশে অর্থ নিয়ে গেছেন। এ অর্থ আমাদের সবার। এ অর্থ ১৮ কোটি মানুষের। এ অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে এবং লুণ্ঠনকারীরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক তাদের ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এরা জাতির দুশমন, এরা লুটেরা। এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।
দেশটা সবার, ছাত্রদের আন্দোলনে আপামর জনতা অংশ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এ আন্দোলনে সব রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষ শরিক হয়েছে। প্রবাসী ভাইয়েরাও দেশবাসীর সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নিযেছেন। আন্দোলন করতে গিয়ে তারা নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। একটি দেশে ৫৭ জনকে গ্রেফতার করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ছাড়িয়ে আনতে হবে। আমরা এ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই যে, তারা উদ্যোগ নিয়েছেন এবং ওই দেশের সরকারকেও ধন্যবাদ জানাই তারা আন্দোলনকারীদের ক্ষমা করে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি করছি, তাদের মর্যাদাপূর্ণভাবে পুনর্বাসন করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের পরিচালনায় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ও মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যরা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।