রাইজিংসিলেট- রোববার (১৯ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরাতে বিদেশে যাওয়া হলো না মোস্তাকের। পাসপোর্টের জন্য আঙ্গুলের ছাপ দিতে ঢাকায় যাচ্ছিলেন মোস্তাক আহমেদ (৪২)। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসেই সিঙ্গাপুর যেতেন। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় মোস্তাকের সেই স্বপ্ন আরপূরণ হলো না। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। নিহত মোস্তাক আহমেদ গোপালগঞ্জ জেলার বনগ্রাম এলাকার সামসুল হকের ছেলে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কোনে নির্বাক চোখে তাকিয়ে ছিল মোস্তাকের স্ত্রী জোনাকি বেগম। স্বামীর মরদেহ গ্রহণ করতে দুই সন্তানকে নিয়ে শিবচর এসেছেন তিনি। স্বামীর কথা জিজ্ঞাসা করতেই জোকানি বললেন, ‘এক ঝড়ে আমার সব শ্যাষ হইয়া গেলো। আমার ছোট ছোট দুই পোলারে এতিম কইরা ওনি চইল্লা গেলো। ওগো আমি কি বুঝ দিমু। আমার স্বামীকে তোমরা ফিরাইয়া দাও।’
জোনাকি আক্তার আরও বলেন, ‘সংসারের সুখের আশায় মোস্তাক বিদেশে আবারো যেতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ তা পূরণ করলো না। যে বাসের কারণে আমার জীবনে অন্ধকার নেমে আসছে, তাদের কঠোর বিচার দাবি করি। যেন আইনের ফাঁক ফোকরে এরা বের হয়ে যেতে না পারে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।
মাদারীপুর জেলা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, রোববার সকাল ৮টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাসটি। এ ঘটনায় নারীসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে আহত দুজন মারা গেছে। ঢাকা মেডিকেলে আরও ১০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ছাড়াও আহত হয়েছে কমপক্ষে আরও ২৫ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জনের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। সবাইকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।