ভোলার চরফ্যাশনে বিয়ের দাবীতে ইডেন কলেজের ছাত্রীর অনশন থেকে মুক্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান। অদ্য ২৯ শে এপ্রিল (সোমবার) ভোলার একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান বলেন, বিয়ের দাবীতে অনশনকারী ইডেন কলেজ ছাত্রী জান্নাতের সাথে আমার কোন প্রেমের সম্পর্ক ছিলো না। সে কাল্পনিক নাটক সাজিয়ে আমাকে বিয়ের জন্য ব্লাকমেইল করতেছে। তার এই কর্মকান্ডের ফলে আমি ও আমার পরিবার মানসিক ও সামাজিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
একটি কুচ্ছিত মহলের ইঙ্গিতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কাল্পনিক নাটক সাজিয়ে বিয়ের দাবীতে এই অনশন করছে। আমি তার এই হয়রানীমূলক অনশন থেকে মুক্তি চাই। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে মিজানুর রহমান আরও বলেন, গত ৭/৮ মাস আগে ইডেন কলেজের ছাত্রী জান্নাতের সাথে চাকুরী পরীক্ষার কক্ষে আমার পরিচয় হয়। জান্নাত বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন হাওলাদারের মেয়ে। সে মিরপুর আলহেলাল হাসপাতালে চাকুরী করেন। পরিচয়ের পর থেকে তার সাথে আমার কয়েকবার মোবাইল ফোনে কথা হয়। ওই সময় জান্নাত আমাকে জানায় তার সাথে ওই হাসপাতালের স্টাফ জয়নালের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। জয়নাল জান্নাতকে বিয়ে করবে বলে জানিয়েছে।
এর কিছুদিন পর জয়নাল জান্নাতকে বিয়ে না করে হল হলচাকুরীচুত করে। বিষয়টি জান্নাত আমাকে জানিয়ে এ ব্যাপারে সাহায্য চেয়েছে। আমি জয়নালের সাথে জান্নাতের বিয়ের বিষয়ে কথা বললে জয়নাল বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং জয়নাল বিবাহিত বলে আমাকে জানান। আমি জয়নালের বিষয়টি জান্নাতকে জানিয়েছি। এই ঘটনার কিছুদিন পর ২০২৪ সালের জানুয়ারী মাসে আমার সরকারী চাকুরী হয়। এই কথা শুনে জান্নাত বিয়ের জন্য আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আমি এরিয়ে চলি। এরপর জান্নাত উল্টো আমাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়ে ব্লাকমেইল করে। পরবর্তীতে জান্নাত আমার অফিসে যায় এবং ঈদের পর জান্নাতের প্রেমিক জয়নালকে নিয়ে আমার গ্রামের বাড়ীতে এসে আমাকে বিয়ে করার চাপ প্রয়োগ করে।
অথচ জান্নাতেরর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো জয়নালের। আমার সাথে জান্নাতের কোন ধরনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো না। এক পর্যায়ে আমার এলাকার কিছু লোকের কুপরামর্শে জান্নাত আমার বাড়িয়ে গিয়ে উঠে। বিয়ের দাবীতে অনশন করে। আমাকে না পেয়ে আমার পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করে। এখনও সে আমার বাড়িতে অবস্থানরত। আমাকে মামলা ও হত্যার হুমকি এবং নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে ফাঁসোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তার অহেতুক কর্মকান্ডের কারণে আমার বৃদ্ধ বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আমার পরিবার চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। এ ব্যাপারে আমার পিতা মোজাম্মেল হাওলাদার বাদী হয়ে চরফ্যাশন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
যার মামলার নং-৭৫৩, তাং-১৯-০৪-২০২৪ইং।
আমি জান্নাতের এই নাটক থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি। ইডেন কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করা সাদিয়া অভিযোগ করে বলেন, মিজানুর রহমান তৈয়ব আমার সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। সরকারি চাকরি হওয়ায় এখন আর আমাকে বিয়ে করতে চায় না, ফোন রিসিভ করছে না, তাই আমি ১২ এপ্রিল প্রথম অনশন শুরু করি।
এই ঘটনার ব্যাপারে চরফ্যাশন থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওরিন হক বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেযারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। চেযারম্যান সিরাজুল ইসলাম অনশনকারী সাদিয়াকে মিজানের বাবার জিম্মায় রেখেছেন।