মাঝে মধ্যে তিনজনের ইশারায় পুলিশ দু-একটি অভিযান চালায়।
গোয়াইনঘাট সীমান্তে লাইনম্যান শ্যাম কালা উরফে কালা মিয়া, আল আমিন ও দেলোয়ার হোসেন লনির নেতৃত্বে চলছে সকল চোরাচালান ব্যবসা।
স্থানীয় সুত্র মতে, জেলা ডিবি পুলিশের লাইনম্যান শ্যামকালা ও আল আমিন, ও দেলোয়ার হোসেন লনি। বর্তমানে থানা পুলিশের নাম করে ভারতীয় চোরাচালান থেকে দৈনিক লক্ষ -লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তাদের সাথে আরো অনেক লোক রয়েছে। ভারতীয় চোরাচালান থেকে স্থানীয় পুলিশ ও জেলা ডিবি পুলিশের নামে চাঁদা আদায় করে আসছি আমরা এই তিনজন। শুধু আমরা তিনজনের নামে নিউজ করে লাভ কি! নিউজ করতে হলে, যাঁরা আমাদের লাইন দিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যক্তি জানান, জেলা ডিবি পুলিশের লাইনম্যান পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের হাতিরখাল গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে শ্যামকালা উরফে কালা মিয়া ও গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়ন এলাকার হয়াউরা গ্রামের আল আমিন ও পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের দক্ষিণ প্রতাপপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন লনি, ডিবি ও থানা পুলিশের লাইনম্যান শ্যামকালা, আল আমিন, ও দেলোয়ার হোসেন লনি। তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেলো উজ্জল ও মনিক নামের আরো দুই জনের নাম। স্থানীয় সরকারের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার সুবাদে প্রশাসনের সাথে তাদের রয়েছে ভালো সম্পর্ক। এদের শেল্টারদেন স্থানীয় আওয়ামীলীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। এরা স্থানীয় পুলিশ ও জেলা পুলিশের নামে দৈনিক কয়েক লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করে। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ডিবি উত্তর জোনের নামে ভারতীয় চোরাচালান থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করে আসছে তারা।
স্থানীয় সূত্রমতে, সীমান্তবর্তী এলাকায় রয়েছে চোরাকারবারীদের পৃথক পৃথক সিন্ডিকেট চক্র। এগুলোর মধ্যে চোরাকারবারীদের সবচেয়ে শক্তিশালী তথ্য সিন্ডিকেট সিলেটের গোয়াইনঘাট থানা এলাকায়। চোরাচালানীদের এ সব সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন কতিপয় নামধারী টুকাই হলুদ সাংবাদিকও।
সাথে রয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা পাতিনেতা, পুলিশের সোর্স ও থানার দালালগন। প্রশাসনের গতিবিধি নজরদারি করতে এদের পিছনে রয়েছে আরেকটি বাহিনী। এরা সবসময় প্রশাসনের গতিবিধির তথ্য সময়মত চোরাকারবারীদের দিয়ে থাকেন । আর এ সব কারণেই চোরাচালান বিরোধী অভিযানে কাঙ্খিত ফলাফল পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ও রাতে ভারতীয় চোরাই পণ্য স্থল পথে আসছে পিপিলিকার সারিরমতো। তবে এসব পণ্য মাঝে মধ্যে ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। এ সিন্ডিকেট চক্রের সহযোগিতায় চোরাকারবারীরা বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় চোরাইপণ্য আমদানী করে গোয়াইনঘাট ও রাধানগর বাজারে নিরাপদে জমা করা হয়। অতপর গাড়ি বোঝাই করে তা সিলেট শহরের শাহপরাণ বাইপাস এলাকার একটি বাড়িতে জড়ো করা হয়। পরে সেখান থেকে অন্যত্র পাচার করা হয় এসব চোরাই পণ্য। এই উপজেলা অতিক্রম করতে চোরাকারবারিরা সাহায্য নেয় তাদের নিয়োজিত তথ্যসিন্ডিকেটের।
অভিযোগ রয়েছে, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১১নং মধ্যজাফলং ইউনিয়নের সিড়ির ঘাট, হাজীপুর, লামা পুঞ্জি, প্রতাপপুর বিজিবি ক্যাম্প, এর সামনের রাস্তা, লামাপুঞ্জি, নকশিয়া পুঞ্জি, জিরো পয়েন্ট, কাটারি রাস্তা ও জাফলং চা বাগান হয়ে মধ্যজাফলং ইউনিয়ন ও পার্শবর্তী ইউনিয়নের প্রায় ২২টি চোরাই পথ। এ সকল পথে আসছে ভারতীয় পণ্য মাদক, দ্রব্য, চিনি, চা পাতা, পান, সুপারি, আলু, টমেটো, পিঁয়াজ, জিরা, গুঁড়া মসলা, কসমেটিকস, কিট, স্মার্ট মোবাইল ফোন, গাজা, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, ও অস্ত্র। সাথে রয়েছে বিভিন্ন ব্রান্ডের শাড়ি থ্রিপিস লেহেঙ্গা ইত্যাদি। চোরাই পথে আসা এসকল পণ্যের সরকারি কোন বৈধতা না থাকলেও স্থানীয় থানা পুলিশ নিজেদের সোর্স ও স্থানীয় সরকার দলীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে চোরাইপথে আসা ভারতীয় পণ্যের উপর দৈনিক লক্ষ-লক্ষ টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।