দীর্ঘ একদশকেরও বেশি সময় চিকিৎসা সেবা প্রদান থেকে বঞ্চিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. নিয়াজ আহমদ চৌধুরীকে তার স্বপদে বহাল করা হয়েছে। গত ১৯ আগস্ট এক বিশেষ আদেশে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (এন্ডোভাসকুলার এন্ড লেজার সার্জন) হিসেবে পুনরায় নিয়োগ প্রদান করা হয়।
২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী সরকারের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮তম সিন্ডিকেট সভায় ডা. নিয়াজ আহমদ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন মেধাবী অধ্যাপক-কে তাদের অধ্যাপকের পদ থেকে পদাবনতী করা হয়।
বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর এক বিশেষ আদেশে ডা. নিয়াজসহ চাকুরীচ্যুত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব অধ্যাপকদের পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই নিয়োগের প্রেক্ষিতে অধ্যাপক ডা. নিয়াজ আহমদ চৌধুরী ২০ আগস্ট চাকুরীতে যোগদান করেন।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের বাসিন্দা ডা. নিয়াজ আহমদ চৌধুরী সাবেক সচিব ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা (বিচারপতি সাহাব উদ্দিন আহমদ ১৯৯১) ইঞ্জিনিয়ার মরহুম ইমাম উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর একমাত্র পুত্র। অধ্যাপক ডা. নিয়াজ আহমদ চৌধুরী ১৯৮৫ সালে এমবিবিএস পাসের পর উচ্চ শিক্ষার জন্য জাপান গমন করেন। জাপানের হামামাতসু স্কুল অব মেডিসিন থেকে ভাসকুলার সার্জারী বিষয়ে তিনি পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। এছাড়াও আমেরিকা, লন্ডন, সিঙ্গাপুর সহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে এন্ডোভাসকুলার এন্ড লেজার সার্জারী বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন। ডা. নিয়াজ আহমদ চৌধুরী ১৯৯৩ সালে দেশে ফিরে এসে ঢাকা মেডিকেল কলেজে এ্যাসিসটেন্ট রেজিষ্টার (সার্জারী) হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করেন। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের রেজিষ্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালে সহকারি অধ্যাপক (ভাসকুলার সার্জারী) হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০৩ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং সর্বশেষ ২০০৬ সালে অধ্যাপক (এন্ডোভাসকুলার এন্ড লেজার সার্জারী) হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। এ পদে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর তিনি চাকুরীচ্যুত হন।
অধ্যাপক ডা. নিয়াজ আহমদ চৌধুরী জানান, সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে তৎকালীন সরকার তাকে তার দায়িত্ব থেকে অপসারন করেন। সুদীর্ঘ একদশকেরও বেশি সময় তিনি সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা প্রদান থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ডা. নিয়াজ আহমদ চৌধুরী তার নিজ গ্রাম দাউদপুরে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও তিনি ‘সারা’ নামে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করে এলাকার দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষের কল্যাণে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন।