
দীর্ঘ অভিনয়জীবনে ‘টাইটানিক’, ‘দ্য রিডার’, ‘ইটারনাল সানশাইন অব দ্য স্পটলেস মাইন্ড’ ও ‘লিটল চিলড্রেন’-এর মতো চলচ্চিত্রে তার অসাধারণ অভিনয়ের জন্য পরিচিত হলিউডের প্রখ্যাত অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট । এবার ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়েছেন। প্রথমবারের মতো পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন তিনি, আর তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘গুডবাই জুন’ ইতোমধ্যেই দর্শক, সমালোচক ও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রমহলে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। খবর দ্য ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ানের।
মায়ের (জুন) চরিত্রে অভিনয় করেছেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী হেলেন মিরেন এবং তার চার সন্তান- জুলিয়া, মলি, হেলেন ও কনরকে যথাক্রমে অভিনয় করেছেন কেট উইন্সলেট, অ্যান্ড্রিয়া রাইজবরো, টনি কোলেট ও জনি ফ্লিন। চলচ্চিত্রের পটভূমি হলো, ক্রিসমাসের আগে, জুনের স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে, পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে তাদের অতীতের স্মৃতি ও সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে মুখোমুখি হয়।
‘গুডবাই জুন’ একটি সংবেদনশীল পারিবারিক গল্প, যা মৃত্যু, অপূর্ণতা এবং পুনর্মিলনকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে। সিনেমাটির মূল প্রেরণা কেট উইন্সলেটের নিজের মায়ের মৃত্যুর অভিজ্ঞতা থেকে এসেছে, যিনি ২০১৭ সালে ক্যান্সারে মারা যান। এটি একটি পারিবারিক ড্রামা, যেখানে একটি মায়ের শেষ সময়ে তার সন্তানদের সম্পর্কের ভাঙন, ক্ষোভ, অনুশোচনা এবং ভালোবাসার গভীরতা তুলে ধরা হয়েছে।
কেট উইন্সলেট দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্র পরিচালনায় আগ্রহী ছিলেন, তবে ব্যস্ত অভিনয় জীবন তাকে সেই সুযোগ দেয়নি। কিন্তু তার ছেলে জো অ্যান্ডার্স যখন এই ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে তার সামনে আসে, তখনই তিনি উপলব্ধি করেন যে, এটি তার পরিচালনায় নির্মিত হওয়া উচিত। ‘গুডবাই জুন’-এর শুটিং হয়েছে মাত্র ৩৫ দিনের মধ্যে এবং কেট একটি অত্যন্ত সংযত এবং সূক্ষ্ম ভঙ্গিতে চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন।
‘গুডবাই জুন’ ২০২৫ সালের ১২ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচিত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে এবং তার পরেই ২৪ ডিসেম্বর নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাবে, ক্রিসমাসের ঠিক আগে। সমালোচকদের মতে, এটি একটি আবেগঘন পরিবারের গল্প, যা বর্তমান সময়ে বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক, যেখানে পারিবারিক সম্পর্কের দূরত্ব, মানসিক জটিলতা এবং অন্তরঙ্গতার অবক্ষয় নিয়ে গল্পগুলো আরও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
কেটের পরিচালনায়, অভিনেতাদের গায়ে ছোট মাইক্রোফোন লাগিয়ে, ক্যামেরার কাছাকাছি অভিনয় পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, যাতে একটি ঘনিষ্ঠ এবং বাস্তবধর্মী অনুভূতি সৃষ্টি হয়। তার অভিনয়ের শৈলীর মতোই, পরিচালক হিসেবে কেটের প্রতিফলন হয়েছে- অতিরিক্ত আবেগ নয়, বরং চরিত্রের গভীরতা ও মৃদু প্রকাশকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।