ছাত্র-জনতার তোপের মুখে গেল ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। আর তা প্রকাশ্যে আসতেই আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠে দেশের জনগণ।
সেই ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি ধানমন্ডি ৩২-এ অবস্থিত জলের গান ব্যান্ডের গায়ক রাহুল আনন্দের বাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ।
সেদিনের সে ঘটনা নিয়ে এবার মুখ খুললেন রাহুল আনন্দের স্ত্রী চিত্রকর ঊর্মিলা শুক্লা।
সবশেষে রাহুলের স্ত্রী বিশেষভাবে উল্লেখ করেন লেখেন, আমি কোনো কিছু বলার মতো অবস্থায় নাই। তারা কেউ নির্দিষ্ট করে আমাদের বাড়ি পুড়াতে চায়নি। চেয়েছে ৩২-র এই বাড়িগুলো ধ্বংস করতে। আমাদের তো সব গেছে। মানসিকভাবে আমরা বিধ্বস্ত। আমাদের বাস্তবতা আশা করি, সবাই বুঝবেন। বাংলাদেশ সুন্দর হোক। সুন্দর হোক আগামীর পথচলা। আমরা সবাই মিলেই বাংলাদেশ।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, বাইরে জনতার বিজয় মিছিলের চিৎকার। হঠাৎ দেখলাম পেছনের সব বাড়িতে আগুন। আমরা মুহূর্তেই দিশেহারা হয়ে পড়লাম। বুঝলাম ৩২ এর সব বাড়িতেই আগুন লাগানো হয়েছে।
আমাদের বাড়িটা সান্তুর রেস্টুরেন্টের পেছনে। পাশে আমাদের বাড়িওয়ালা জনাব আইনুল হক-এর তিনতলা বাড়ি, সেখানে প্রথম ভাঙচুর হয় ও আগুন দেয়। যখন সান্তুরের গেইট দিয়ে উল্লাসে জনতা ঢুকে পড়েছে আর সান্তুরে আগুন ধরাচ্ছে তখন আমরা বুঝতে পারছিলাম না কী করব। আমার যে ঘর ভর্তি বাদ্যযন্ত্র।
শুক্লা বলেন, তাদেরকে বুঝানোর জন্য এগিয়ে গেলাম পরিবারের সবাই। তারা তখন ৩২ ধ্বংসের উল্লাসে কোনো কিছুই শোনার চেষ্টা করেনি। তবে কিছু মানুষ এগিয়ে এসেছিলৃ তারা চেয়েছিল অন্যদের বুঝাতে। কেউ কারো কথা শোনার মতো অবস্থায় ছিল না। একজন বলল, “১৪ বছরের রাগৃ এই এলাকা ধ্বংস করবেই। বরং আপনাদেরকে আমরা সাবধানে বের করে দিচ্ছিৃ আপনারা এখান থেকে চলে যান। ”
যোগ করে তিনি বলেন, ৩২ ধ্বংস করার উন্মাদনায় আমার ঘর পুড়ে গিয়েছে। শুধু আমার নয়, আমাদের বাড়ির মালিকের ঘরও পুড়েছে। আশপাশের আরো কিছু বাড়ি ঘরও পুড়েছে। আর কারো কোনো ক্ষতি না হোক। আমি অনেকবার কিছু লিখতে চেয়েছি। কিন্তু কান্নায় আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।