raising sylhet
ঢাকাসোমবার , ২৬ আগস্ট ২০২৪
  1. অর্থনীতি
  2. আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আরো
  5. খেলার খবর
  6. গণমাধ্যম
  7. চাকরির খবর
  8. জাতীয়
  9. দেশের খবর
  10. ধর্ম পাতা
  11. পরিবেশ
  12. প্রবাস
  13. প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  14. বিজ্ঞান প্রযুক্তি
  15. বিনোদন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কু-প্রস্তাবে ফেঁসে যাওয়া সেই রওশন হাবিব ও জব্বার আজও বহাল

rising sylhet
rising sylhet
আগস্ট ২৬, ২০২৪ ৬:৫৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিনিধি: ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুর্নীতির আরও দুই ‘নায়ক’ ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি আব্দুল জব্বার। দুই হাতে টাকা কামিয়ে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। এজন্য বারবারই তারা দু’জন বিতর্কিত হয়েছেন। কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে হাসপাতালে সিন্ডিকেট গড়ে টাকা লুটে যাচ্ছেন। সিলেট নগরেও আছে তাদের একাধিক বাড়ি। গত জানুয়ারি মাসে তাদের দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের কাছে আবেদন করেছিলেন হাসপাতালের এক কর্মচারী। তার এই অভিযোগ আমলে নিয়ে দুদকের তরফ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবগত করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতাল ক্লিনিক দপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালকের কার্যালয় থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশনা দেয়া হয়। ওসমানীর পরিচালক এই চিঠি পাওয়ার পর হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এসএম আসাদুজ্জামানকে প্রধান করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আস আদ দীন মাহমুদ ও সিনিয়র স্টোর অফিসার ডা. জলিল কায়সার খোকন। গত ৭ই মার্চ এক আদেশে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটিকে দায়িত্ব দেয়। তদন্ত কমিটির সদস্যরা অভিযোগের পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাইয়ের পর গত সপ্তাহে পরিচালকের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. এসএম আসাদুজ্জামান মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ‘আমাদের উপর যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সেটি আমরা পালন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। নানা গুঞ্জন ছিল সিলেটের রওশন হাবিবকে ঘিরে। তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার। তার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ কর্মচারীরা। এসব অভিযোগের একটি হচ্ছে- ‘নারী কেলেঙ্কারি’। এতদিন হাওয়ায় ভাসছিল নানা গুঞ্জন। অবশেষে রওশন হাবিবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়েছেন এক নারী কর্মচারী। রওশন হাবিব ওই নারীকে কু-প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হন তিনি। রওশন হাবিবের বিরুদ্ধে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। আর জিডি দায়েরের পর ঘটনাটি নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তোলপাড় চলছে। রওশন হাবিব প্রায় ১০-১২ বছর ধরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তিনি ওয়ার্ড মাস্টার হিসেবে কর্মরত। ওসমানী হাসপাতালের সকল কর্মচারীর কর্মস্থল বণ্টন সহ নানা কাজ তার। এ কারণে তিনি একতরফা আধিপত্য রাখেন কর্মচারীদের ওপর। গত মঙ্গলবার সিলেটের কোতোয়ালি থানায় রুপা খানম নামে এক কর্মচারী সাধারণ ডায়েরি করেন। এতে তিনি অভিযুক্ত করেছেন রওশন হাবিবকে। জিডিতে রুপা নিজেকে বুশরা সিকিউরিটি সার্ভিসেস (প্রা.) লিমিটেডের হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসি এটেনডেন্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন বলে জানান। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী একটি হোস্টেলে বসবাস করেন তিনি। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন তার ডিউটি প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টায় শেষ হলেও তাকে রাত ১০টা পর্যন্ত ডিউটি করতে হয়। এ সময় তার সকল সহকর্মী চলে যান নিজেদের বাসাবাড়িতে। কিন্তু রুপাকে হাবিবের সঙ্গে আলাপে সময় দিতে হয়। এক পর্যায়ে ৬ই ফেব্রুয়ারি রুপাকে কু-প্রস্তাব দেন ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব। তার এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভয়ভীতি ছাড়াও চাকরি থেকে বিদায় করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। জিডিতে রুপা নিজের নিরাপত্তা দাবি করেন। এদিকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ জিডি গ্রহণের পর বিষয়টির তদন্তে নেমেছে। পুলিশ জানায়, ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিবের বিরুদ্ধে এক নারী অভিযোগ করেছেন।

 

আরও পড়ুন —http://ওসমানী হাসপাতালের কর্মচারীরা ওয়ার্ড মাষ্টার রওশন হাবিব ও ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী আব্দুল জব্বারের হাতে জিম্মি

ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব প্রায় এক যুগ ধরে ওসমানীতে কর্মরত রয়েছেন। এই এক যুগের শাসনে তিনি ওসমানী হাসপাতালকে টাকা আয়ের খনি হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এছাড়া কর্মরত নারীদের কু-প্রস্তাবসহ নানা কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত ৯ই ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়েছেন রুপা খানম নামের আউটসোর্সের এক নারী কর্মচারী। সম্ভ্রম হারানোর আশঙ্কায় থানায় জিডিও করেছেন। আর এই জিডি দায়েরের পর রওশনকে ঘিরে তোলপাড় চলছে হাসপাতালে। নানা কথা রটছে কর্মচারীদের মুখে মুখে। রওশন হাবিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তর। এসব অভিযোগের মধ্য রয়েছে- ক্যাজুয়েলিটি বিভাগসহ দু’টি ওটির ওষুধসহ সরঞ্জাম বিক্রি, জরুরি বিভাগের ট্রলি বাণিজ্য, লেবারওয়ার্ডে নিজের বলয়ের মাসি নিয়োগ ও ওষুধ বাণিজ্য, টাকার বিনিময়ে ওটিতে কর্মচারী বদলি, প্রতি ওয়ার্ড থেকে প্রতি রোস্টারে নির্ধারিত টাকা আদায়, হাসপাতালের কোয়ার্টার ব্যবহার না করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ধোপা কোয়ার্টারে বসবাস, মহিলা কর্মচারীদের হয়রানি ও আউটসোর্সিং কোম্পানিতে কর্মচারী নিয়োগে টাকা আদায়। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগের কারণেই ওসমানী হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। হাসপাতালের কয়েকজন পুরনো কর্মচারী গতকাল মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ওসমানী হাসপাতালের মহিলা কর্মচারীরা সব সময় তার কারণেই তটস্থ থাকেন। কখন তার নজর কার ওপর পড়ে সেটি কেউ জানেন না। যখন যার ওপর নজর পড়ে তখন তাকে ডেকে নেয়। এতে অনেকেই চাকরি হারানো ও মান-সম্মানের ভয়ে প্রতিবাদ করেন না। ২০১১ সালের দিকে তেমনটিই ঘটেছিল হাসপাতালে। ওই সময় ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব এক মহিলাকে নিয়ে স্টাফ কেবিনের ভেতরেই ছিলেন। খবরটি যায় তার স্ত্রীর কাছে। তার স্ত্রীও ছিলেন ওই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স। তিনি এসে রওশন হাবিবের কুকীর্তি ধরে ফেলেন। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে অনেক ঝামেলা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে ঘটনাটি। এই ঘটনার পর স্ত্রী রওশন হাবিবকে ডিভোর্স দেন। এখন একমাত্র মেয়েকে নিয়ে রওশন ওসমানী মেডিকেলে ধোপা কোয়ার্টারে বসবাস করেন। কর্মচারীরা জানিয়েছেন, ধোপা কোয়ার্টারে রওশন হাবিব অবৈধভাবে বসবাস করছেন। তার বসবাস করার কথা স্টাফ কোয়ার্টারে। কিন্তু নিজের প্রয়োজনেই তিনি স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাস না করে ধোপা কোয়ার্টারেই থাকছেন। আর ওই কোয়ার্টারই হচ্ছে তার অপকর্মের মূল আস্তানা। প্রায় সময় নারী কর্মচারীরা ওই কোয়ার্টারে যাতায়াত করেন। টাকা লেনদেনের সব হিসাব-নিকাশও হয় ওখানে। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সার ইউনিটের পাশে পানের দোকান বসিয়ে দিয়েছেন ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব। তিনি প্রতি সপ্তাহে ওই দোকান থেকে ভাড়া হিসেবে টাকা নেন। অথচ ক্যান্সার ইউনিটটি স্পর্শকাতর ইউনিট। এই ইউনিটের পাশে পান সিগারেটের দোকান বসানো সম্পূর্ণ বেআইনি। হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। ওই বিভাগে প্রতিদিনই আসেন এক্সিডেন্ট, সংঘর্ষ নানা আহত রোগীরা। তাদের অধিকাংশ রোগীরই তাৎক্ষণিক জরুরি অপারেশনের প্রয়োজন হয়। ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের নিজের পছন্দের লোককে সব সময় ডিউটি দিয়ে থাকেন। অপ্রয়োজনী ওষুধগুলো রোগীকে ফেরত না দিয়ে তার লোকজন বিক্রি করে দেয়। আর এতে লভ্যাংশের একটি বড় অংশ পান রওশন। ওসমানীর দু’টি ওটি হচ্ছে রওশন হাবিবের আয়ের অন্যতম উৎস। দু’ভাবে তিনি রোস্টার ভিত্তিতে আয় করে থাকেন। যাদের নিয়ে ওই ওয়ার্ডে ডিউটিতে দেন তারা প্রতি রোস্টারে (১০ দিন পর) ওয়ার্ড মাস্টারকে বড় অঙ্কের টাকা দিতে হয়। আর অপারেশনের পর অপ্রয়োজনী ওষুধ বিক্রির টাকার বড় অংশ পান তারা। এ কারণে বাইরের অনেক ফার্মেসির মালিক হাসপাতালের ওটিতে থাকা রোগীর জন্য ওষুধ বিক্রি করতে চান না। হাসপাতাল এলাকার এক ফার্মেসির মালিক জানিয়েছেন, অপারেশনের পর ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিবের লোকজন বেশির ভাগ ওষুধ ফেরত নিয়ে আসে। এবং ওষুধের বিনিময়ে টাকা নিয়ে নেয়। ফলে রোগীদের কথা চিন্তা করে তারা অনেকেই ওটিতে অপারেশন সরঞ্জাম ও ওষুধ বিক্রি করতে চান না। ওসমানী হাসপাতালে ওয়ার্ড সংখ্যা ২৭টি। সব ওয়ার্ডে জনবল বণ্টনের দায়িত্ব ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিবের। তিনি জনবল বণ্টনের নামে কর্মচারীদের কাছে ওয়ার্ড বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কারণ প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে রোস্টার বা প্রতি ১০ দিন পর পর তাকে নির্ধারিত হারে টাকা দিতে হয়। যেসব কর্মচারীরা টাকা কম দেন কিংবা দেন না তাদেরকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। এ কারণে ওসমানী হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ড যেনো কর্মচারীদের আয়ের উৎস। ওয়ার্ডে বেড পেতে লাগে টাকা। অনেক সময় বেড খালি থাকলেও রোগীরা মাটির বিছানায় থেকে সেবা নিয়ে থাকেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে কর্মচারীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রোগী কিংবা তার স্বজনকে নাজেহাল করেন।

১৪৬ বার পড়া হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।