কোনে অভিযোগ উঠেনি চব্বিশের ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পরবর্তী সময়ে।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজীর সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েও টিকে থাকতে পারলেন না। একটি সংঘবদ্ধ কুচক্রী ও মহল চিনি চোরাচালানের সিন্ডিকেটে জাড়িত কয়েক সাংবাদিকের কুট চালের কাছে পুলিশ কমিশনারকে হার মানতেই হলো।
উপ পুলিশ কমিশনার তাহিয়াত আহমদ চৌধুরীকে ট্রাফিকের ডিসি’র দায়ীত্ব দেয়ার পর অনেকেরই বুকে কাপন শুরু হয়েছিলো, কারণ তাহিয়াত আহমদ চৌধুরী আপাদোমন্তক একজন সৎ পুলিশ অফিসার, বিশেষ করে আর্থিক লোভ লালসা তাঁর মধ্যে নেই। ঘুষখোর এর তালিকায় তিনি নাম লেখাতে পারেননি। তার প্রমান পাওয়া গেছে আওয়ামীলীগের আমলে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি থাকাকালীন সময়ে। মাদক, নারীদেহ ব্যবসা, চোলাচালান এবং জুয়াড়ীদের কাছ থেকে তাঁর নামে কেউ ঘুষের টাকা সংগ্রহ করতে পারেনি। যদিওই ভিরতে তৎকালীন এডিসি শাহরিয়ার আল মামুন অনেক অপকর্ম করেছিলেন কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনে অভিযোগ উঠেনি চব্বিশের ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পরবর্তী সময়ে। কারণ তাঁর পরিবারের লোকজন জামায়াত-বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত। তাহিয়াত আহমদ চৌধুরীকে ট্রাফিকের ডিসি’র দায়ীত্ব দেয়ার পরই অজুহাত খাড়া করা হয়েছিলো, তাঁর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের দমন সক্রান্ত দুটি মামলা রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তাহিয়াত আহমদ চৌধুরীকে দুটি মামলায় এজাহার নামীয় আসামী করার নেপথ্যে ছিলো চিনি চোরাচালানের সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত একাধিক সাংবাদিক। এই সাংবাদিরাই তাদের বলয়ের লোক দিয়ে মামলা করানোর সময় তাহিয়াত আহমদ চৌধুরীর নাম জড়িয়ে দিয়েছিলো।
তিনি ডিবি’র ডিসি থাকাকালে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে অনেক চিনির চালান আটক হয়েছিলো, সিন্ডিকেটের সাংবাদিকরা সেই চালান মাঠ পর্যায় থেকে ছাড়িয়ে নিতে পারেনি তাহিয়াত আহমদ চৌধুরীর দৃঢ়তার কারনে।
সে সময় গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার হিসেবে তাহিয়াত চৌধুরী যে ভুলটি করেছিলেন, তা হলো যুবদল সেচ্ছাসেবকদল চোলাচালান সিন্ডিকেটে জড়িত সাংবাদিকদের নাম আটক করা চোরাচালানের মামলায় পলাতক আসামী হিসেবে এজাহারভুক্ত করেননি। অনেক সাংবাদিক, ডিবি কর্তৃক আটক চোরা চালানের চিনির চালানের মালিকানা দাবী করে তদবির করার পরও তাহিয়াত চৌধুরী সে সব তদবির কারীদের নাম সংশ্লিষ্ট চোরাচালান মামলার আসামীর তালিকায় লিপিবদ্ধ না করার খেসারত এখন তাঁকে দিতে হচ্ছে। অখ্যাত মিডিয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, তাহিয়াত আহমদ চৌধুরী মানুষের বাসা- বাড়ীতে গিয়ে হয়রানী করেছন, ডিবি’র ডিসি থাকাকালে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে সংঘবদ্ধ ভারতীয় মালের চোলাচালানীদের বিরুদ্ধে যে সব অভিযান তিনি দিয়েছিলেন সেই সব অভিযান গুলোকেই রাজনৈতিক রূপ দিয়ে বিএনপি ঘরানার কিছু সাংবাদিক, যারা সরাসরি চিনি সহ অন্যান্য ভারতীয় চোরাই মালের ব্যবসার সাথে জড়িত, সেই সাথে আরো কিছু সাংবাদিক আছে যারা চোরাচালানীদের কাছ থেকে সুবিধাভোগ করে তারাই মিডিয়ায় তাহিয়াত আহমদ চৌধুরীর কাছ থেকে প্রতিশোধ হিসেবে এখন অপপ্রচার করছে। তিনি ট্রাফিকের ডিসির দায়ীত্ব পাওয়ায় চোলাচালান সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত সাংবাদিকরা বেশ শংকায় পড়েছিলো। কারন ট্রাফিকের অফিসাররা ইচ্ছে করলে সড়কে চোরাচালানও দমন করতে পারেন, তাহিয়াত আহমদ চৌধুরীর কাছে অনেক সোর্স রয়েছে, সেই সোর্স তিনি ব্যবহার করে যদি সড়কে চোলাচালান বিরোধী কার্যক্রম চালান তবে একটি চালানও এসএমপি এলাকার ভিতর দিয়ে বাহিরে যাওয়া সম্ভব ছিলোনা, সেই আতংকে পড়ে কিভাবে তাহিয়াত চৌধুরীকে ট্রাফিকের ডিসি’র পদ থেকে সরানো যায় সেই ফাঁদ তারা পেতেছিলো মিডিয়াকে ব্যবহার করে। যদি পুলিশ কমিশনার তাঁর সিদ্ধান্তে অটল থেকে তাহিয়াত চৌধুরীকে ট্রাফিকের ডিসি’র পদ থেকে না সরাতেন তখন তারা ব্যার্থ হয়ে আরো বাঁকা পথ অনুসরণ করতো। পুলিশ কমিশনারতো অখ্যাত সেই মিডিয়ার সাংবাদিকদের বলেই ছিলেন, তাহিয়াত চৌধুরীর নাম যে মামলায় রয়েছে সেই মামলার তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে প্রয়োজীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে, তদুপরি চোরাচালান সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত সাংবাকিদের কাছে তিনি হার মেনে যেনো পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্টকেই হার মানিয়ে দিয়েছেন।
সূত্র – বাংলার বারুদ