স্থানীয়দের কাছে এটি ‘বানরের টিলা’ নামে পরিচিত।
সিলেটের আম্বরখানা এলাকার গোয়াইটুলায় হযরত চাষনী পীর (রঃ) এর মাজারের টিলার গাছগাছালিতে কয়েকশো বানরের বসবাস।
প্রতিদিন এখানে মাজার দর্শনের পাশাপাশি বানর দেখতেও আসেন অসংখ্য পর্যটক। তবে টিলার গাছ কেটে ফেলায় খাদ্যাভাবে মাঝে মাঝে হিংস্র হয়ে উঠে বানরেরা। আক্রান্ত করে আশপাশের বাসিন্দাদের। বানরদের রক্ষায় ও উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ চাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
চাষনী টিলার পাশেই দলদলি চা বাগান। এই বাগানেই ছিল বানরগুলোর আদি নিবাস। আশির দশকে চা বাগানের একাংশের বন কেটে গড়ে তোলা হয় আবাসন। ১৯৮৪ সালের শুরুর দিকে সেখানকার বানরগুলো এসে মাজার এলাকায় বসত গড়ে। সেই থেকে ওরা এখানেই রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ বর্তমানে টিলা এলাকায় পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে প্রায়ি হিংস্র হয়ে উঠেছে বানরেরা। আক্রান্ত করছে আশপাশের বাসিন্দাদের। ঘরে ঢুকে ছিনিয়ে নিচ্ছে খাবার-কাপড়চোপড়। আক্রমণ করছে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলা লোকজনের ওপর।
মাজারে বেড়াতে আসা দর্শনার্থী মটর-কলা-বিস্কুট বা জেলি যে যাই দিচ্ছেন বানানগুলো তা নিয়ে যাচ্ছে। বানরের এবস কার্যকলাপ দেখে বেশ আনন্দ পাচ্ছেন তার। মাজারের টিলার উপর গাগাছালিতে প্রায় চারশ বানরের বাস।
প্রতিদিন দূর দুরান্ত থেকে মাজার দর্শনের পাশাপাশি বানর দেখতেও আসছেন অসংখ্য পর্যটক। যে যার মত পাশের দোকান থেকে খাবার কিনে দিচ্ছেন। দর্শনার্থীদের হাত থেকে বানরেরা নিয়ে যাচ্ছে এসব খাবর। এমন সচরাচর দেখতে না পাওয়ায় বেশি আনন্দিত তারা।
ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক মোহাম্মদ আশরাফুল কবীর, টিলার কয়েকশো বানর সংকটে আছে। আগের থেকে বানরের সংখ্যাও বেড়েছে। এছড়ার আশপাশের অনেক গাছগাছালি কেটে ফেলা হয়েছে। যার ফলে নানা উপদ্রবের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এদের রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তার।
হযরত চাষনী পীর মাজারের মোতয়ালী আব্দুর রব রউজ জানান, টিলা ও গাছপালা কেটে ঘরবাড়ি নির্মাণে খাদ্য ও আবাস সঙ্কটে পড়েছিল এখানকার বানরেরা। এছাড়া এখানে এদের পর্যাপ্ত খাবার নেই। পর্যটকদের দেওয়া খাবারের উপর এরা নির্ভরশীল। এছাড়া টিলার জায়গা অবৈধ দখল হচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এক একর ৭৮ শতক জায়গায় বিস্তৃত এই টিলা সিলেট সিটি করপোরেশনের ৫নং ওয়ার্ডের কলবাখানি এলাকায়। এখানে বাসকরা বানরগুলোর খাদ্য সংকট সমাধান ও নিরাপদ আবাসস্থলের দাবি সচেতন সমাজের।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। কিছুদিন আগে মাজার ভ্রমণ করেছি আমি। মাজারের টিলায় বানরের জন্য গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। মাজার কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে গাছ রোপনের উদ্যোগসহ সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বানরগুলো রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।