সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার আহারকান্দি গ্রামে জমি নিয়ে পুরনো বিরোধের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন আল-আমিন (৩০) নামের এক যুবক। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে, এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড আখ্যা দিয়ে নূর হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকেও পাল্টা মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
সরেজমিনে জানা যায়, জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল আহারকান্দি গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে আল-আমিন ও হাজী রুস্তম আলীর ছেলে নূর হোসেন খোকার পরিবারের মধ্যে। যে জমি নিয়ে বিরোধ, সেটি মূলত আল-আমিনের চাচি আনোয়ারা বেগমের কাছ থেকে ক্রয়সূত্রে নূর হোসেনের মালিকানায় আসে। একাধিক সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হলেও আনোয়ারা বেগমের ছেলে ও আল-আমিনের চাচাতো ভাই শাহেদ আহমদ বিষয়টি মেনে নেননি।
সম্প্রতি নূর হোসেন ওই জমিতে ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিলে শাহেদ আহমদ বাধা দেন। নূর হোসেন আদালতের নির্দেশ ও বৈধ কাগজ দেখালেও শাহেদ উত্তেজিত হয়ে গালিগালাজ শুরু করেন এবং গ্রামবাসীকে জড়ো করেন। পরে শাহেদের সঙ্গে তার আত্মীয়-স্বজন ও সমর্থকরা যুক্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। নূর হোসেনের ছেলে কামাল হোসেন রুহেল পিতাকে রক্ষার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। সংঘর্ষে আল-আমিনসহ অনেকে আহত হন। আহত অবস্থায় আল-আমিনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান।
ঘটনার পর শাহেদ ও তার অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে নূর হোসেন খোকার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। বাড়িঘর, দোকান, এমনকি গাছপালাও নষ্ট করে দেয় তারা। নূর হোসেনের পরিবারের দাবি, এ হামলায় প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া পরবর্তীতেও নূর হোসেনের আত্মীয়দের ওপর হামলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও বিরোধের মীমাংসা না হওয়ায় গ্রামে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে।