জৈন্তাপুর উপজেলার আসামপাড়ার একটি ফল বাগানের ভিতর দিয়ে চোরাকারবারিদের পণ্য বহনে বাধা দেয়ায় বাগানের মালিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় বাগান মালিক জৈন্তাপুর নেয়াখাই গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে আব্দুর রউফ (দুলাল) (৪২), বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারী) রাতে জৈন্তাপুর মডেল থানায় ২২ জনের নাম উল্ল্যেখ করে অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গত সোমবার (১০ ফেবুয়ারী) রাত অনুমান সাড়ে আট ঘটিকার সময় জৈন্তাপুর থানাধীন ২নং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অর্ন্তগত আসামপাড়া মৌজার আদর্শগ্রাম খরম পুরস্থ বাদীর লিজকৃত সুপারী, ফলদ ও বনজ গাছের বাগানে এ ঘটনা ঘটে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, আব্দুর রউফ ও তার পার্টনাররা মিলে আসামপাড়া মৌজায় অন্যের ভুমি আট বছরের জন্য লিজ নিয়ে সেখানে সুপারী, লেবু, কমলা, আমসহ বিভিন্ন জাতের ফলজ ও বনজ গাছের বাগান করে আসছেন।
অপর দিকে আসামীরা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পদধারী নেতাকর্মী, সন্ত্রাসী ও চোরাকারবারী দলের সক্রিয় সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত থেকে অবৈধ গরু, মহিষ মাদকদ্রব্যসহ চোরাই পণ্যের ব্যবসা করিয়া আসছে।
আসামীরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় অবৈধ চোরাই পণ্য লিজকৃত বাগানের ভিতর দিয়া আনা নেওয়া করার কারনে ফল বাগান নষ্ট হচ্ছিল।
বাদী ও তার পার্টনারগন বিবাদীদের বাধা নিষেধ করা স্বত্বেও বাদীকে বিভিন্নরখম ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরকরে বাগানের ভিতর দিয় অবৈধ ভারতীয় মালামাল বহন করছিল।
এসময় আসামীরা নগদ প্রায় আড়াইলাখ টাকা, একটি পালসার, একটি হিরো গ্লামার ও একটি হিরো স্প্লেন্ডার মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আহতদের চিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে আসামীরা পালিয়ে যায়।
এরি ধারাবাহিকতায় ঘটনার রাতে আসামীরাসহ অজ্ঞাত নামা আরো ৪০/৫০ জন মিলিত হয়ে ভারতীয় গরু, মহিষ, মাদকদ্রব্য বাগানের ভিতর দিয়ে বহনকালে বাধা দিলে বাদীসহ অন্যান্যদের উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এতে বাদীসহ তবারক আলী, এনাম আহমদ, মোয়াজ্জেম হোসেন ও আব্দুর রহিম আহত হন।
এ ঘটনায় আব্দুর রউফ (দুলাল) বাদী হয়ে জৈন্তাপুর থানায় মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারী) রাতে ২২ জনের নাম উল্ল্যেখ করে অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় আসামীরা হলেন, মিজান আহমদ (রুবেল) (৩৫) (ছাত্রলীগ সভাপতি পদপ্রার্থী), আব্দুস ছাত্তার (৩৮) (যুবলীগ নেতা), সোলেমান আহমদ কন্টু (৫০) (আওয়ামীলীগ নেতা), রাশেদ আহমদ (৩০) (ছাত্রলীগ নেতা), শাহিন আহমদ (৩৬) (যুগ্ম আহবায়ক, জৈন্তাপুর উপজেলা যুবলীগ), আব্দুল জব্বার (৪৫) (যুবলীগ নেতা), বারেক আহমদ (৪০) (যুবলীগ নেতা), ইসমাইল আলী (৪০) (সাধারণ সম্পাদক, ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ), আব্দুল জলিল (৩০) (যুবলীগ নেতা), আব্দুস শহিদ (৪০) (আওয়ামীলীগ নেতা), আক্তার হোসেন (২৮), পাকি মিয়া (৩০), এমরান আহমদ (৩২), রাজিব আহমদ (২৫), সায়েম আহমদ (৩০), মাজুল ইসলাম (২৮) (যুবলীগ নেতা), আলীম উদ্দিন (৩০) (যুবলীগ নেতা), আতাউর রহমান (৪০), আব্দুল মিয়া (২৫), ইন্তাজ আলী (৪৫) (যুবলীগ নেতা), আব্দুল মালিক (৫৩), হায়দার আলী (৩৫) সহ অজ্ঞাত নামা ৪০/৫০ জন।
এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। আহতদের মধ্যে এনাম আহমদের শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্হা গ্রহন করব।