বরগুনার আমতলীতে পৈতৃক জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে লাঠিসোঠা দিয়ে বড় বোন ও ভগ্নিপতিসহ তিন জনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ছোট ভাই নূরুল হুদা গাজী ও তার পুত্র ইমরান হোসেন গাজীর বিরুদ্ধে। আহতদের চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পূর্ব চুনাখালী গ্রামের বাসিন্দা মরহুম গনি গাজী এক পুত্র ও তিন কণ্যা রেখে মারা যায়। মৃত্যুর পরে পিতা গনি গাজীর সন্তারা পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি ওয়ারিশ সূত্রে ভাগ-ভাটোয়ারা করে ভোগদখল করার কথা থাকলেও ভাই নুরুল হুদা গাজী বোনদের জমিজমা বুঝিয়ে না দিয়ে একাই ভোগদখল করতে থাকে। ওই বিষয় নিয়ে ভাই বোনদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। এক পর্যায়ে গত ৬ ফেব্রæয়ারী ২০২৩ তারিখে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমিজমা বুঝে পেতে বড় বোন নাজমা বেগম কুকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহমেদ মাসুম তালুকদার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নিজাম মাতুব্বর, আনোয়ার দফাদার, সাবেক ইউপি সদস্য আঃ সালাম, প্রভাষক রাশোয়ানকে শালিস মেনে বিষয়টির ফয়সালা করতে নির্দেশ দেয়। শালিসগন ওই বিরোধীয় জমি-জমার কাগজপত্র বিশ্লেষন করে মরহুম গনি গাজীর তিন কণ্যা ওয়ারিশ সূত্রে ৪৬ করা জমি পাবে বলে সিন্ধান্ত হয়। শালিসগন তাৎক্ষনিক ওই সময়ই ৪৬ করা জমির মধ্য থেকে ৩৬ করা জমি তিন বোনকে বুঝিয়ে দেয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর অনুমান ১২টার দিকে ওই জমিতে বোনদের পক্ষে বড় ভগ্নিপতি নূরুল ইসলাম মোল্লা (৬০), বোন নাজমা বেগম (৫০) ও অপর বোন আসমা বেগম (৩৫) চাষাবাদ করতে গেলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছোট ভাই নূরুল হুদা গাজী, তার পুত্র ইমরান হোসেন গাজী ও স্ত্রী শিউলি বেগম লাঠিসোটা দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে তাদেরকে আহত করে। ওই সময় তাদের ডাক চিৎকারে স্বজন ও স্থাণীয়রা এগিয়ে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
অভিযুক্ত ছোট ভাই নূরুল হুদা গাজী বলেন, আমাদের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া বিরোধীয় জমিতে আমার বোনেরা জোরপূর্বক চাষাবাদ করতে এলে আমার সাথে একটু ঝামেলা ও হাতাহাতি হয়েছে।
আহত বড় বোন নাজমা বেগম বলেন, শালিশদের সিন্তান্ত অনুযায়ী আমার মরহুম পিতার রেখে যাওয়া আমাদের ভাগের জমিতে আমার স্বামীকে নিয়ে চাষাবাদ করতে গেলে আমার ছোট ভাই নূরুল হুদা গাজী, ভাইয়ের ছেলে ইমরান ও ভাইয়ের স্ত্রী শিউলি বেগম আমাদের লাঠিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
কুকুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহমেদ মাসুম তালুকদার বলেন, ভাই বোনদের জমিজমা নিয়ে বিরোধের বিষয়টি ফয়সালা করার জন্য আমি উভয় পক্ষের সম্মতিতে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যসহ স্থাণীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের শালিস মেনে দিয়েছিলাম। যতটুকু জানি তারা জমির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বিষয়টি ফয়সালা করে দিয়েছেন।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক মুঠোফোনে জানান, আহতদের হাত, পা ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ওই বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।