বুধবার (২৮ আগস্ট) এ প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির ও এর সহযোগী সংগঠনকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘যেহেতু বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং উহার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনের সন্ত্রাস ও সহিংসতায় সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় নাই; এবং যেহেতু সরকার বিশ্বাস করে যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং উহার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত নহে’ তাই দলটির নিষিদ্ধ ঘোষণা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হলো।
দায়িত্ব গ্রহণের ২৩তম দিনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী এবং তার ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহার করলো অন্তর্র্বতী সরকার।
এর আগে গত ১ আগস্ট বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী এবং তাদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করে বিগত শেখ হাসিনা সরকার। এরপর গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সরকার পতনের পর পরিবর্তন হয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট।
এতে আরও বলা হয়, যেহেতু সরকার বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ তাদের সব সহযোগী সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সহিত জড়িত আছে। সেহেতু, সরকার, সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ তার সব সহযোগী সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ তার সব সহযোগী সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করলো। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
জামায়াতকে নিষিদ্ধের ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত কয়েকটি মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (পূর্বনাম জামায়াত-ই- ইসলামী/জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ) এবং তার সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে (পূর্বনাম ইসলামী ছাত্রসংঘ) ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী হিসেবে গণ্য করা হইয়াছে। যেহেতু, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রিট পিটিশন নং-৬৩০/২০০৯-এ ১ আগস্ট ২০১৩ তারিখের প্রদত্ত রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এর রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত/প্রাপ্ত নিবন্ধন বাতিল করে দিছে এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগের ওই রায়কে বহাল রাখিয়াছে; এবং যেহেতু, সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ আছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং তার সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিল।