ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগ করেন।
পরিস্থিতির এহেন আকস্মিতায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে ও জনরোষে পড়ার ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন সদ্য পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি-মন্ত্রীসহ প্রভাবশালী নেতা ও কর্তাব্যাক্তিরা। নেতাদের পাশাপাশি তাঁদের কাছের অনুসারীরাও মোবাইল বন্ধ রেখেছেন। এই অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীরাও।
যেখানে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে ও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সেখানে সিলেটের ব্যস্ততম তামাবিল স্থলবন্দরে আওয়ামী লীগ নেতাদের পুনর্বাসনে মেতে ওঠেছেন সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহপরাণ।
ছাত্র-জনতার রোষ থেকে রক্ষা ও নিরাপত্তা দেওয়ার নামে সীমান্ত এলাকার আওয়ামী দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা। পুনর্বাসনও করিয়ে দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজ লুটেরাদেরকে।
জানা গেছে, সিলেটে ব্যস্ততম স্থলবন্দর তামাবিল দীর্ঘপ্রায় দেড় দশক থেকে দখল করে রেখেছেন জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার সাথে সাথে তামাবিল স্থলবন্দর এমনকি বাড়িঘর থেকে পালিয়ে ভবঘুরে চলে যান দুই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও সন্ত্রাসীরা। আর এ সুযোগে আওয়ামী ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের নিরাপত্তা দিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহপরাণ।
জেলা বিএনপি নেতা প্রথমেই সীমান্তের শীর্ষ সন্ত্রাসী জৈন্তাপুর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অর্থ সম্পাদক জালাল উদ্দিনের সাথে হাত মিলিয়ে হাতিয়ে নেন দুই কোটি টাকার পাথর-বালু। বিনিময়ে বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম শাহপরাণ তামাবিল স্থলবন্দরে আওয়ামী লীগ নেতা জলাল উদ্দিনকে পুনর্বাসন করে দেন। নিজ নেতৃত্বে শোডাউন করে আওয়ামী লীগ নেতা সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী জালাল উদ্দিনকে তার তামাবিলের বাড়িতে নিরাপদে পৌছিয়ে দেন এবং আওয়ামী নেতাকর্মীদের সাথে গ্রুপ ছবি উঠান। পরে একটি সভা করেন আওয়ামী লীগ নেতা জালাল উদ্দিনকে সাথে নিয়ে। জালালকে সাথে নিয়ে পরিদর্শন করেন স্থলবন্দরের বিভিন্ন স্থান।
সিলেট জেলা বিএনপি নেতা রফিকুুল ইসলাম শাহপরাণের আস্কারা পেয়ে দুই উপজেলার আওয়ামী নেতাকর্মীরা জড়ে হয়ে লুটে নেন তামাবিল স্থলবন্দরে থাকা বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও আমদানী কারকদের কয়েক কোটি টাকার চুনাপাথর কয়লা ও বালু।
উল্লখ্য, তামাবিল স্থলবন্দর চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত আলী ও তামাবিল স্থলবন্দর চুনাপাথর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সহ-সভাপতি হচ্ছেন জৈন্তাপুর আওয়ামী লীগের নেতা জালাল উদ্দিন। তারা দীর্ঘদিন থেকে তামাবিল স্থলবন্দরে ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েম করে রেখছেন। বিএনপি ও জামাতপন্থি ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত তাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। এমনকি তাদেরকে কোন প্রকার সুযোগ সুবিধাও দেয়া হচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের ওই নেতারা সরকার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে চোরাইপথে মাল আমদানী করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। কিন্তু এই ছাত্র-গণবিপ্লবের পর
আওয়ামী সন্ত্রাসীরা স্থবন্দর ছেড়ে পালিয়ে যায়।
আর এ সুযোগে আর্থিক ও ব্যবসায়িক সুবিধা নিতে এই আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে হাত মিলিয়েছেন বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম শাহপরান। আন্দোলনে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করে চলেছেন তিনি।
এ বিষয়ে,বক্তব্য নিতে সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহপরাণের সেলফোনে বুধবার রাত কল দিলে কল রিসিভ করে কোনো বক্তব্য না দিয়েই কিছুক্ষণ পর ফোনকল কেটে দেন।
তবে জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক জালাল উদ্দিন প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতা শাহপরাণের সার্বিক তত্বাবধানে ব্যবসায়িক নিরাপত্তা পাওয়ার কথা অবলীলায় স্বীকার করেন।