বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাহবুবুর রহমান এ রায় দেন। ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণপোষণ রাষ্ট্র বহন করবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে শহীদুল ইসলাম খোকন (২৩) নামে যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
দণ্ডিত শহীদুল ইসলাম খোকন ঘাটাইল উপজেলার শেখ শিমুল গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে।
ভিকটিমের মামা ছানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২০২২ সালের ২০ মে ঘাটাইল থানায় খোকনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা না নেওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আলী আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ভিকটিম ঘাটাইল উপজেলার স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী। দণ্ডিত শহীদুল ইসলাম খোকন ভিকটিমের প্রতিবেশী চাচাতো ভাই। এ সুযোগে খোকন ভিকটিমের বাড়িতে ও মাদরাসায় যাওয়া আসার পথে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের সূত্রধরে ২০২১ সালের ১ অক্টোবর বিয়ের আশ্বাসে খোকন নিজের বাড়িতে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এরপর ভিকটিমকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন খোকন। এতে ওই ছাত্রী অন্ত:সত্তা হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি ভিকটিমের পরিবারের লোকজন জানতে পেরে স্থানীয়ভাবে বিচার সালিশের করেন। তখন খোকন তাকে বিয়ে করবে এবং ওই অনাগত সন্তানকে স্বীকৃতি দিবে বলে স্বীকার করে। কিন্তু তিনি ছাত্রীকে বিয়ে না করে পালিয়ে যান।
এ ঘটনার পর ভিকটিম একটি পুত্রসন্তান জন্ম দেন। ডিএনএ পরীক্ষায় আসামি খোকন ওই শিশুর জৈবিক পিতা বলে প্রমাণিত হয়। তদন্ত শেষে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদনপত্র জমা দেন। পরে এই মামলায় নয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় শহীদুল ইসলাম খোকনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আলী আহমেদ। সহযোগিতা করেন সহকারী সরকারি কৌঁসুলি আব্দুর রহিম ও মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস। এ মামলায় আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ইলিয়াস খান পারভেজ।