নিজ বসতঘরসহ জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কুবাজপুর আহমদাবাদ গ্রামের লন্ডন প্রবাসী মৃত শাহনেওয়াজ চৌধুরীর স্ত্রী সুহেনা আক্তার চৌধুরীর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত । সোমবার সিলেট সিটি প্রেসক্লাবে আয়োজতি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুহেনা আক্তার চৌধুরীর দেবর পুত্র মো: খলিল মিয়া চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার স্বামীর দূর সম্মর্কের চাচাতো ভাই আফাজ চৌধুরী, এনামুল হক ও ইউসুফ মিয়ারা স্থানীয় ভাবে খারাপ লোক। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। আফাজ চৌধুরী একটি চাঁদাবাজী মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তার নিজস্ব একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দল রয়েছে এলাকায়। এরা সমাজের চিহ্নিত খারাপ লোক হওয়ায় তাদের অপরাধমূলক কাজের প্রতিবাদ করার সাহস পায়না স্থানীয় লোকজন। আমার পরিবারের সবাই প্রবাসী ও রেমিটেন্সযোদ্ধা আমারদের সহায় সম্পত্তি দেখাশুনার জন্য একমাত্র আমি দেশে অবস্থান করছি। কিন্তু আফাজ চৌধুরীসহ তার সহযোগীরা বারবার আমার উপর হামলা, আমার বসত বাড়ি জবর দখলসহ আমার বিরুদ্ধে নানা রকম অপবাধ দিয়ে সমাজে হেয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
গত ২ সেপ্টম্বর বিকাল অনুমান ৩ টার দিকে আমি আমার নিজ বাড়িতে ঘরে অবস্থান করছিলাম। সে সময় একই গ্রামের আফাজ চৌধুরী, এনামুল হক ও ইউসুফ মিয়ার বসত বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে আমার কাছে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা বাদী করে আমাকে গালাগালিসহ নানা রকম হুমকি দিতে থাকে। এমনকি তারা আমার উপর হামলা চেষ্টা করে। সে সময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে আমি প্রাণে রক্ষা পাই এবং উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা চলে যায়। পরের দিন ৩ সেপ্টম্বর সকাল অনুমান ৬ টা দিকে উল্লেখিত সন্ত্রাসী সহ প্রায় শতাধিত অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা আবারও আমার বসত বাড়ি এসে আগের দিনের মতো ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। সে সময় তাদের কাছে দেশয়ি বসব রকম অস্ত্র দা, রামদা, লোহার রড ছিলো। আমি তাদের কথামতো চাঁদা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে উল্লেখিত ব্যক্তিরাসহ তাদের সাথে থাকা অপর সন্ত্রাসীরা এক্সেভেটর দিয়ে আমার বসত ঘর ভাংতে থাকে এবং আমাকে প্রাণে হত্যার চেষ্টার করে। এ সময় আফাহ চৌধুরীর সহযোগীর এনামুল হক, রাজিব চৌধুরী ও ইউসুফ মিয়া আমার শরীরে কাপড়ে ধরিয়া টানা হেচড়া করিয়া কিল ঘুষি মারাসহ দাবীকৃত দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে চাপ দিতে থাকে। তাহাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে না পারায় উল্লেখিতসহ নাম অজ্ঞাত ব্যক্তিরা আমার বসত ঘরে অনধিকার প্রবেশে ব্যাপক লুটপাট চালায় এবং এক্সেভেটর দিয়ে আমার পাঁকা বসত ঘর ভাঙ্গে ফেলে। আমাদের শোর-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীগন তাদেরকেও খুন করার হুমকি দেয়। জনস্মুখেই জোরপূর্বক চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীগন আমার বসত ঘর ভেঙ্গে ফেলে। এতে আমার স্বামীর বাপ-চাচার স্মৃতিচিহ্ন পুরাতন বসত ঘর ও তাদের ভাইদের প্রবাসী আয়ের কষ্টার্জিত টাকার তৈরী দালান ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়।বিষয়টি আমার সাথে থাকা চাচাতো দেবর পুত্র খলিল মিয়া চৌধুরী উক্ত কর্মকান্ডসহ ঘর ভাঙ্গার কিছু অংশ মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন। যা প্রমাণ হিসেবে আমি আপনাদের কাছে ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সরবরাহ করেছি। আমি সদ্য অসহায় একজন বিধবা মহিলা, আমার ৩ সন্তান এবং আমার প্রয়াত স্বামীর ভাইগণ ও তাদের পরিবার সবাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী তাই স্বামীর ও উনার ভাইদের সহায় সম্পত্তি দেখাশুনা-রক্ষণাবেক্ষণ করতে আমিই একা দেশে অবস্থান করছি। চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীগণ আমাদের গ্রামের এবং স্বগোত্রীয় ও অত্যন্ত উগ্র, দাঙ্গাবাজ, চাঁদাবাজ, পরধন গোষ্ঠী, লুটেরা, খুনিয়া ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক হওয়ায় গ্রামের লোকজন সাহস করে এগিয়ে আসছেন না। আমার বসত ঘর ও ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া ও ৬০ লক্ষ টাকার নগদ টাকা স্বর্ণালংকার ও ব্যবহৃত জিনিসপত্র লুটপাটের আগে-পরে আত্মীয় শুভাকাঙ্খির সহযোগিতায় জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করি।
জগন্নাথপুর থানার মামলা নং-০২/২০২৪ ইং। উক্ত মামলা করার কারণে চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের হুমকিতে আমি এখন প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। গত রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) এলাকাবাসী আমার সহমর্মী হয়ে স্থানীয় এলাকায় একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সোমবার আপনাদের সম্মুখে আমার জানমাল রক্ষার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানাতে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছি। এসময় সুহেনা আক্তার সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরদের এবং ভিডিওসহ মামলা সংক্রান্ত প্রমানাধি উপস্থাপন করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্তিত ছিলেন, সুহেনা আক্তার চৌধুরী আত্মীয় মৃত সাজিদ মিয়ার ছেলে রিজু মিয়া, ইয়াওর মিয়ার ছেলে লুবন মিয়া, সুনু মিয়া চৌধুরীর ছেলে ছাত্তির মিয়া, ইয়াওর মিয়ার ছেলে নাইম মিয়া, মোহাম্মদ আলীর ছেলে তামিম আহমদ প্রমুখ।