
রাইজিংসিলেট- পবিত্র আশুরায় সিলেটজুড়ে দোয়া, রোজা ও শোকানুষ্ঠান, সিলেটে পবিত্র আশুরা পালিত: ইবাদত-বন্দেগি ও শোকের আবহে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দিনযাপন। আজ পবিত্র আশুরা—হিজরি বছরের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ দিনটি ইসলামের ইতিহাসে শোক ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। সিলেটজুড়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দিনটি পালন করছেন গভীর শ্রদ্ধা, ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মশুদ্ধির মধ্য দিয়ে। নানা আয়োজনে স্মরণ করা হচ্ছে কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনা।
সকাল থেকেই বিভিন্ন মসজিদ ও ইসলামিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আয়োজন করা হয় কোরআন তেলাওয়াত, বিশেষ দোয়া মাহফিল ও ইসলামের শিক্ষা নিয়ে আলোচনা সভার। অনেকে নফল রোজা রেখে, নামাজ আদায় করে, দান-খয়রাত ও জিকিরের মাধ্যমে পালন করছেন দিনটি।
হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম ইরাকের কারবালা প্রান্তরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রা.) তাঁর পরিবার ও সঙ্গীদের নিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিতে গিয়ে শহীদ হন। তাঁদের এই আত্মত্যাগ মুসলিম ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত।
সিলেটের মুসলিম জনগণ কারবালার এই শোকাবহ ঘটনার স্মরণে নানা আয়োজন করেছেন। অনেক মসজিদে দিনব্যাপী জিকির, ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ছাড়া সামাজিক উদ্যোগে দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ ও দান-সাদাকার আয়োজনও দেখা গেছে।
শিয়া সম্প্রদায়ের জন্য আশুরা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তারা প্রতিবছরের মতো এবারও তাজিয়া মিছিল, শোকানুষ্ঠান ও স্মরণসভা আয়োজন করেছেন। কারবালার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহরের কিছু এলাকায় শোকাবহ পরিবেশ দেখা যায়, যেখানে কালো পতাকা ও ব্যানার টানানো হয়।
ধর্মীয় অনুশাসনের অংশ হিসেবে বহু মুসলমান আশুরায় নফল রোজা পালন করেন। হাদিস অনুযায়ী, আশুরার রোজা অতীতের এক বছরের গুনাহ মাফের কারণ হতে পারে—এই ফজিলতের আশায় রোজা রাখেন অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান।
সিলেটের আলেম সমাজ মনে করেন, “কারবালার ঘটনা কেবল শোক নয়, এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার প্রেরণা। হজরত ইমাম হোসেন (রা.)-এর আত্মত্যাগ আমাদের শিখিয়ে যায় কিভাবে সত্য ও ন্যায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।”
এইভাবে, ইতিহাস, আত্মত্যাগ ও ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতার মিশেলে সিলেটে পালিত হচ্ছে পবিত্র আশুরা। এই দিনের শিক্ষা যেন সমাজে শান্তি, ন্যায় ও মানবতার আলো ছড়িয়ে দেয়—এমনই কামনা সবার।