
সুযোগ নিচ্ছে এলাকার মাদক ব্যবসায়ী, মাদক সেবী ও জুয়াড়ীরা। দিনরাত চলছে নানান অসামাজিক কার্যকলাপ।
বাড়িটির অবস্থান কানাইঘাট থানার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে। মালিক ৩নং ওয়ার্ডের ছত্রপুর গ্রামের মরহুম মাষ্টার মাহমুদ মিয়া। তবে তার উত্তরসুরাীরা এখন নগরবাসী হওয়ায় বাড়িটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। বেশ কয়েকটি ঘর আছে ইটের। কিন্তু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি এখনো। নেই সীমানা প্রাচীর।
পাশেই ঐহিত্যবাহী গাছাবাড়ী বাজার। কলেজসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও আছে কাছাকাছি। আছে মসজিদ এবং মাদরাসাও। বাজারে আসা বিভিন্ন এলাকার লোকজন, ব্যবসায়ী ও মুসল্লিদের এ কারণে বারবার বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। তারা মালিক পক্ষের শরনাপন্ন হলেও তারা নির্বিকার। এমনকি, নির্বিকার প্রশাসনও- এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সম্প্রতি গাছবাড়ীবাজার এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এই প্রতিবেদক কে জানান, বাড়িটিতে চলা এসব অসামাজিক কাজের কারণে এলাকার সার্বিক পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জুয়াড়ীদের অঘোষিত এই্ আস্তানায় মাদক বেঁচাকেনা এবং মাদক সেবনও চলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত।
তারা আরও জানান, এ ব্যাপারে বাড়িটির মালিক মরহুম মাহমুদ মাষ্টারের ছেলে সাদিক আহমদকে বারবার জানানো হলেও তিনি কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না। অন্তত বাউন্ডারি দেওয়াল নির্মাণ করে সুরক্ষিত করে রাখাতে পারলে এ অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব হতো। কিন্তু তিনি এ ব্যাপারে সাড়া দিচ্ছেন না অজ্ঞাত কারণে।
তারা আরও জানান. কানাইঘাট থানাপুলিশকে মৌখিকভাবে অবগত করলেও তারাও এ ব্যাপারে নিষ্ক্রিয়।
এ বাড়িতে মদক ব্যবসা ও সেবন এবং জুয়াড়ীদের অবাধ বিচরণ বা দিনরাত জুয়ার দান চলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন কানাইঘাট গাছবাড়ীবাজার বণিক সমমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক।
বাড়িটির মালিক মরহুম মাহমুদ মিয়া মাষ্টারের ছেলে সাদিক আহমদ বলেন, বাড়িটিতে আমরা থাকিনা। সেই সুবাদে এলাকার ছেলে-ফেলেরা যে এখানে যাতায়াত করেনা, তা না। আমি তা অস্বীকার করছিনা। তবে এখানে অন্য একটি চক্র সক্রিয়।
তিনি বলেন, একটি মহল বাড়িটি পানির দামে কিনতে আগ্রহী। যতদূর জানি তারাই এদের সেখানে পাঠায়। এতে আমরা বিরক্ত হয়ে অল্পদামে কাউকে বিক্রি করে দিই- এই ধরণের একটা পরিকল্পনা থেকে এটা করা হচ্ছে। কেউ কেউ আবার তিলকে তালও বানাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এখন যখন জানলাম, আমি এ ব্যাপারে একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। এলাকার সম্মানিত মুরব্বিদের নিয়ে পরামর্শ করে প্রয়োজনে থানাপুলিশের সহযোগীতাও নিবো, অভিযোগ করবো।
তিনি তার বাড়িতে এসব অপকর্ম বন্ধে প্রশাসনের পাশাপাশি এলাকার সর্বস্তরের মানুষেরও সহযোগীতা চেয়েছেন।
সভাপতি আব্দুল হামিদ বলেন, আমরা বারবার বাধা দিয়েছি। এমনকি সমাইকে নিলে দলবদ্ধভাবে তাদেরকে প্রতিরোধ করতে গিয়েছি। কিন্তু তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। বাড়ির মালিক পক্ষকে জানালেও তারাও নিরব।
সেক্রেটারি মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। বিচ্ছিন্নভাবে এবং সবাই মিলে চেষ্টা করেও ব্যর্থ। এ ব্যাপারে এখন পুলিশের হস্তক্ষেপ ছাড়া কোনো বিকল্প দেখছিনা। এলাকার পরিবেশ সুন্দর রাখতে এ ধরণের অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরী। এতে আমাদের মতো ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে প্রচন্ড আঘাত লাগছে।
কানাইঘাট থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মো. আব্দুল আউয়াল বলেন,বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়।
তিনি বলেন, এরকম কোনো অভিযোগতো আমাদের কাছে আসেনি। বাড়ির ঠিকানা জানলে আমরা অবশ্যই অভিযান চালাবো। আর এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দিলে আরও ভালো। আমরা বেআইনী কার্যকলাপ বন্ধে স্থানীয়দের সহযোগীতা চাই।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্যর মোবাইলে কল দিলেও সেটি বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। বাণীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিনের মোবাইলেও একাধিকবার কল দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি রিসিভ করেন নি।