
বাংলাদেশে সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনতে চলেছে । ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জুলাই থেকে দেশের ২১টি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া ডিজিটাল নামজারি পদ্ধতি শিগগিরই সারাদেশে সম্প্রসারিত হবে। এই পদক্ষেপ জমির মালিকানা সংক্রান্ত আইনি জটিলতা কমিয়ে আনবে এবং ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
নতুন আইনের অধীনে এখন থেকে শুধু দলিল থাকলেই জমির মালিকানা প্রমাণ করা যাবে না। ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩’ অনুযায়ী, দলিলের পাশাপাশি নামজারি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নামজারি কেন জরুরি
নামজারি সম্পন্ন না হলে আপনি সরকারের রেকর্ডে জমির বৈধ মালিক হিসেবে গণ্য হবেন না। এর ফলে জমি বিক্রি করা, উত্তরাধিকারসূত্রে হস্তান্তর করা অথবা জমির খাজনা পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। ভবিষ্যতে জমির মালিকানা নিয়ে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কাও থাকবে। সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, শুধুমাত্র দলিলের ভিত্তিতে জমি রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই জমি কেনা বা উত্তরাধিকারসূত্রে জমি পাওয়ার পর দ্রুত নামজারি সম্পন্ন করাই এখন বৈধতার একমাত্র উপায়।
নামজারি ছাড়া জমির বিপক্ষে বেশ কিছু বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে আপনার জমি অন্য কেউ বিক্রি করে দেওয়ার সুযোগ পেতে পারে, আইনের চোখে আপনি সেই জমির মালিক হিসেবে বিবেচিত হবেন না এবং ডিজিটাল রেকর্ডে আপনার মালিকানা যুক্ত হবে না।
বর্তমানে নামজারির আবেদন অনলাইনে করা যাচ্ছে এবং সরকার নির্ধারিত ফি মাত্র ১১৭০ টাকা। আবেদন দাখিলের পর আবেদনকারীদের এসএমএস-এর মাধ্যমে শুনানির তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। যদি সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তি নামজারি না পান, তবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের হেল্পলাইন ১৬১২২ নম্বরে কল করে অভিযোগ জানাতে পারবেন। কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তার কথাও উল্লেখ করেছে।
জনসাধারণকে সতর্ক করে দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছে যে, নামজারি ছাড়া দলিল ব্যবহার করে জমি রেকর্ড হবে না। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে নামজারি সম্পন্ন করে নিজেদের মালিকানা নিশ্চিত করার জন্য জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছে।