ফুটবলের উন্নয়নের জন্য ফিফার অর্থায়নে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালংয়ে তৈরি হওয়ার অপেক্ষায় ছিল ‘বাফুফে সেন্টার অব এক্সিলেন্স’।
তবে কক্সবাজারের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে এই অবকাঠামো নির্মাণ নিয়ে পরিবেশবাদীরা অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই সমস্যার সমাধান করে কিছুদিন আগেই দ্রুতই কাজ এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বাফুফে। আজ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয় খুনিয়াপালংয়ের বদলে একই উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের ধলিরছড়ায় ১৯.১ একর জায়গার কথা বলা হয়েছে।
যে ২০ একর জায়গা রয়েছে তার মধ্যেই করতে হবে। নির্মাণ কাজের জন্য যতগুলো গাছ কাটা হবে তার দ্বিগুণ কিংবা বেশি গাছ আমাদের রোপণ করতে হবে। সেখানে আরও কিছু হাতি রয়েছে। তাদের খাবারের জন্য গহিন অরণ্যে কিছু কাঁঠাল গাছ, কলা গাছ এসব রোপণ করতে হবে। এছাড়া বেশ কিছু সরীসৃপ প্রাণী রয়েছে, তাদের জন্য কিছু জলাশয় তৈরি করে দিতে হবে। তারা যেন খাবার পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া সেখানকার স্থানীয় লোকজনদের প্রজেক্টের মধ্যে সম্পৃক্ত করতে হবে। সেটা হোক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে কিংবা স্থানীয়দের ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করে।
কক্সবাজারের খুনিয়াপালংয়ে সরকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ২০ একর জায়গা ডি-রিজার্ভ করে বাফুফেকে বরাদ্দ দিয়েছিল। সেখানে স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে পরিবেশবাদীরা অভিযোগ তুললে ইএসআইএ (ইনভাইরোনমেন্ট সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট অ্যানালাইসিস) রিপোর্ট করে বাফুফে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে সেই রিপোর্ট তৈরি করে ফিফায় পাঠিয়েছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সেখানে বন সংরক্ষণের জন্য বেশ কিছু শর্তও ছিল। ইএসআইএ রিপোর্টের শর্তগুলো ছিল অনেকটা এমন, বরাদ্দকৃত জমির বাইরে কোনও স্থাপনা করা যাবে না।
তবে এবার বদলে যেতে চলেছে বাফুফে সেন্টার ফর এক্সিলেন্সের ঠিকানা। নতুন সরকারের দেওয়া ঠিকানায় পরিকল্পনা করতে হবে। এই বিষয়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বাংলানিউজকে বলেন, ‘চিঠিটা আমি পেয়েছি। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনো কোনও আলাপ হয়নি। কাল অফিসে গিয়ে আমরা আলোচনা করবো। সরকারই আমাদের জায়গাটা দিয়েছিল। আমরা বলিনি যে ঐ জায়গাই আমাদের দিতে হবে। আমরা জায়গা চাইলে আমাদের তিনটা স্থানের প্রস্তাবনা দেয়া হয়। সেখান থেকেই তারা আমাদের এই জায়গা দিয়েছি।
‘আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিব। যদি পরিবর্তন করতে হয় সেক্ষেত্রে আমরা চাইবো ঢাকার আশেপাশেও অনেক জমি আছে। সেখান থেকেও যদি দেওয়া সম্ভব হয় তবে ভালো হয়। কক্সবাজারের চাইতে ঢাকার আশেপাশে হলে সবার জন্যই সুবিধা হবে।
ইতোমধ্যেই ফিফার কাছে ইএসআই রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছে বাফুফে। ফিফা অনুমোদন দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছিলেন তুষার। সেই অনুযায়ী ফিফা সময়ও বেঁধে দিয়েছিল এবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই বিষয়ে তুষার বলেন, ‘আমাদের হাতে সময় খুবই কম। ফিফা ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। এখন আমাদের হাতে তেমন সময় নেই মাত্র তিন-চার মাস সময় আছে। এর মধ্যেই সব করতে হবে। স্থান পরিবর্তন হলে ফিফার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এরপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।