গণঅভ্যূত্থানে সরকার পতনের পর থেকে মেয়র ও আওয়ামী লীগ দলীয় কাউন্সিলররা কোথায় আছেন কেউ জানেন না। জনপ্রতিনিধিদের না পেয়ে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ও বাসাবাড়ির নকশা অনুমোদনসহ বিভিন্ন সেবা নিতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে নগরবাসীকে। স্থানীয় কার্যালয়ে কাউন্সিলরদের না পেয়ে অনেকে নগরভবনে গিয়ে তাদেরকে খোঁজ করছেন। কিন্তুহতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে তাদেরকে।
তবে, সকল সংকট কাটিয়ে নাগরিক সেবা নিশ্চিতে সিসিক সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর থেকে সারাদেশের মতো সিলেটের রাস্তায়ও নেমে আসেন সাধারণ মানুষ। মিছিল আর স্লোগানে তারা বিজয়োৎসব করেন। এরপর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও আওয়ামীপন্থী কাউন্সিলররা।
গত বছরের ২১ জুন সিসিকের পঞ্চম নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুলকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ওই বছরের নভেম্বরে তিনি মেয়র পদে দায়িত্বগ্রহণ করেন। বিএনপিহীন ওই নির্বাচনে ৩৬টি ওয়ার্ডের বেশিরভাগেই কাউন্সিলর পদে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ নেতারা।
জন্মনিবন্ধন, মৃত্যুসনদ ও বাসাবাড়ির নকশা অনুমোদনসহ বিভিন্ন কাজে কাউন্সিলরদের স্বাক্ষর অত্যাবশ্যক হওয়ায় এসব সেবাগ্রহীতারা পড়েছেন বিপাকে। কাউন্সিলরদের স্থানীয় অফিসে না পেয়ে নগরভবনেও গিয়েও তাদেরকে খোঁজ করছেন অনেকে। কিন্তু তাদের সন্ধান মিলছে না।
কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়া বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কেউ কেউ নিজস্ব সন্ত্রাসী গ্রুপও লালন করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এসব কাউন্সিলররা আত্মগোপনে চলে যান। ফলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নাগরিকরা পড়েন বিপাকে।
এদিকে, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সারাদেশের মতো সিলেটেও দুর্বৃত্তরা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। সিলেট সিটি করপোরেশন ভবনেও হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে কর্মচারীদের মধ্যেও আতঙ্ক চেপে ধরে। প্রায় চারদিন পর নগরীর বর্জ্য অপসারণ শুরু হয়। তবে এই কাজেও ধীরগতি দেখা দেয়। অন্যান্য সেবা কার্যক্রমেও ধীরগতি দেখা দেয় বলে জানা গেছে।
এই সংকট থেকে শিগগিরই সিলেট সিটি করপোরেশন বের হয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আগামীকাল (আজ) সোমবার নগরভবনে সভা আহ্বান করা হয়েছে। আমরা সেন্ট্রালি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। আশা করা যাচ্ছে এ সপ্তাহেই মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা পাওয়া যাবে।’
ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী জানান, বর্জ্য অপসারণে নগরভবন কাজ করছে। রবিবার সিলেট পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে সবধরণের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। দুর্বৃত্তরা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিল।