সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির নিয়ার্ক বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ একজন ভারতীয় শিক্ষার্থীকে হাতকড়া পরিয়ে মাটিতে শুইয়ে রেখেছে। এ ছাড়া তার পুরো শরীর মাটির সাথে চেপে ধরে রাখেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। যা নিয়ে ভারতে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীটিকে চেপে ধরে আছেন চার পুলিশ সদস্য। যার মধ্যে দুজন হাটু গেড়ে তার ওপর বসে ছিলেন। এরপর তারা তার হাত ও পা বেঁধে ফেলে।
এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন ভারতীয়-আমেরিকান উদ্যোক্তা কুণাল জৈন। তিনিই প্রথম ভিডিওটি করেন। কুণাল জৈন মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে লিখেছেন, একজন তরুণ ভারতীয় ছাত্রকে বহিষ্কৃত হতে দেখেছি। তার হাতে হাতকড়া পরানো, ক্রন্দনরত, দাগী অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছিল ওই ছাত্রের সঙ্গে। এটি একটি হিউম্যান ট্র্যাজেডি।
এদিকে গত কয়েক মাসে কয়েকশ ভারতীয়কে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ফেরত পাঠানোর আগে তাদের হা-পা বাঁধা হয়।
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর নিউইয়র্কস্থ ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
ওই প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেছেন, ওই সময় সেখানে প্রায় ৫০ জন মানুষ ছিলেন। কিন্তু কারও কিছু বলার সাহস ছিল না। আমার মনে হয় তাকে মাটির সঙ্গে চেপে ধরা হয়েছিল কারণ সে কিছুটা উগ্র আচরণ করছিল এবং সে দিশেহারা ছিল। কিন্তু কেন সে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল আমি জানি না। কর্তৃপক্ষ বলছিল তারা হিন্দি ভাষা বোঝে না। সে হরিয়ানভি ভাষায় কথা বলছিল। আমার মনে হচ্ছিল আমি কোনো সহায়তা করতে পারব না। তা সত্ত্বেও কাছাকাছি গিয়ে আমি এক কর্মকর্তাকে বলি, ওই শিক্ষার্থী কি বলতে চাইছে আমি এ ব্যাপারে তাদের সহায়তা করতে পারি কি না। কিন্তু তিনি আমাকে সহায়তা করতে দেননি। এর বদলে তিনি আরও পুলিশকে ডাকেন।
তিনি আরও বলেন, যখন কেউ উগ্র আচরণ করেন তখন কাউকে বিমানে উঠতে দেওয়া হয় না। ওই শিক্ষার্থী এমন আচরণ করায় তারা বিমানের পাইলটকে ফোন করেন। কিন্তু পাইলট জানান তারা তাকে বিমানে নিতে পারবেন না। কারণ তিনি অন্যদের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারেন। আর এরপরই পুলিশ সদস্যরা তাকে চেপে ধরে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো সাত থেকে আটজন পুলিশ এসে তার হাত-পা বেঁধে ফেলে। ওই সময় আমি কেঁদে দেই। তারা কেন এমনটি করল তাও প্রকাশ্যে।