বিয়ের দাবিতে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন এক কলেজছাত্রী।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাঁশতৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লাল মিয়াকে বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে দ্বিতীয়বারের মতো অবস্থান নিয়েছেন ওই তরুণী।
খবর পেয়ে উৎসুক জনতা ভিড় করছেন ওই বাড়িতে। লাল মিয়ার স্ত্রী ও শাশুড়ি বাড়ির বারান্দায় তালা দিয়ে ঘরের ভেতরে অবস্থান করছেন।
জানা যায়, শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে লাল মিয়া ওই কলেজছাত্রীকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী আজগানা ইউনিয়নের চিতেশ্বরী গ্রামে ঘুরতে যায় এবং চিতেশ্বরী গ্রামের কলেজ ছাত্রীর ফুপুর বাড়িতে যান। সেখানে বিয়ের দাবি করা হলে লাল মিয়া তার স্ত্রীসহ আত্মীয়দের খবর দিয়ে ওই বাড়িতে নেন। তারা গিয়ে শনিবার বাঁশতৈল পরিষদে বিয়ে পড়ানো হবে বলে চলে আসেন। লাল মিয়া কলেজছাত্রীর সাথে ওই বাড়িতে রাত্রিযাপন করেন।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদে এ বিষয়ে সালিশ বসে। সেখানে হেলাল নামে স্থানীয় এক বিচারক লাল মিয়াকে কৌশলে পালাতে সহায়তা করেন। বিকেলে ওই কলেজছাত্রী বিয়ের দাবিতে লাল মিয়ার বাড়িতে অবস্থান নেয়। বাড়ির উঠানে বসে রাত্রি পার করেন।
সাত বছর আগে লাল মিয়ার সঙ্গে ওই কলেজছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভনে তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই কলেজছাত্রী বিয়ের তাগিদ দিলে নানা অযুহাতে এরিয়ে যান লাল মিয়া। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। সালিশে ওই ছাত্রীকে বিয়ের আশ্বাস দিলেও বিয়ে করেননি লাল মিয়া। গত ২৩ জুলাই সকালে বিয়ের দাবিতে লাল মিয়ার বাড়িতে অবস্থান নেন ওই কলেজছাত্রী।
এসময় লাল মিয়ার স্ত্রী ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়ে তরুণীকে ঘর থেকে বের করে দেন। ওই সময় স্থানীয়দের চাপে লাল মিয়া ওই ছাত্রীকে বিয়ে করবেন প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বের হন। পরে ওই ছাত্রীকে তাদের বাড়িতে রেখে কাজি আনার কথা বলে লাল মিয়া পালিয়ে যান।
লাল মিয়ার স্ত্রী জানান, তার স্বামীর সঙ্গে বিয়ে না করিয়ে অন্য কোনো উপায়ে মেয়েটিকে তার বাড়ি থেকে ।
লাল মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রবিবার ওই কলেজছাত্রী বলেন, সারারাত লাল মিয়ার বাড়ির উঠানে বসে রাত্রি যাপন করেছি। মশার কামড় খেয়েছি। স্থানীয় লোকজন আমার এই অবস্থা দেখতে আসে। কেউ সমাধান করতে আসে না। আমি লাল মিয়াকে স্বামী হিসেবে পেতে চাই।
বাঁশতৈল ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল দেওয়ান বলেন, লাল মিয়া এবং ওই কলেজ ছাত্রীর বিয়ের বিষয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। সালিশে বিয়ে করতে রাজি হলেও পারিবারিক চাপে এড়িয়ে চলছেন লাল মিয়া। শনিবার সকালেও ইউপি কার্যালয়ে তাদের ব্যাপারে সালিশ বসে। সালিশ থেকে লাল মিয়া কৌশলে চলে যাওয়ায় শেষ করা সম্ভব হয়নি। বিয়ের দাবিতে কলেজ ছাত্রী বাড়িতে অবস্থান নেয়া লাল মিয়ার কৌশলও হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।