
বিশ্বকে সতর্ক করেছে পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের জায়গায় নির্মিত রাম মন্দিরে পতাকা উত্তোলন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ডন নিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাহির হুসেইন আন্দ্রাবি এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটি ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর চাপ সৃষ্টির বিস্তৃত প্রবণতার প্রতিফলন। তিনি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদী হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের প্রভাবে মুসলিম ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংসের ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা চলছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘পবিত্র অনুষ্ঠানে’ ওই ‘মন্দিরের’ শীর্ষে একটি গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করেছেন, যা এর নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার সংকেত বহন করে।
মুখপাত্র তাহির হুসেইন আন্দ্রাবি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভারতের বাড়তে থাকা ইসলামোফোবিয়া, ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং ঘৃণাপ্রসূত হামলার বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মুখপাত্র আরও বলেন, নানা ঐতিহাসিক মসজিদ এখন অপবিত্র করা বা ভেঙে ফেলার হুমকির মুখে রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ভারতীয় মুসলিমরা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্রমবর্ধমান প্রান্তিকীকরণের শিকার হচ্ছেন।
তিনি জাতিসংঘ এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি জোর দিয়ে বলেন, ইসলামী ঐতিহ্য সুরক্ষায় এবং সকল সংখ্যালঘুর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অধিকারের নিরাপত্তায় তাদের গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।
পাকিস্তান ভারতের সরকারকে আহ্বান জানায় যে, তারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাধ্যবাধকতার আলোকে মুসলিমসহ সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং তাদের উপাসনালয়গুলো রক্ষা করবে।
পাকিস্তান মন্তব্য করেছে যে, শতাব্দী প্রাচীন উপাসনালয় বাবরি মসজিদ ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর উগ্রবাদী জনতা ধ্বংস করে দিয়েছিল। ভারতের পরবর্তী বিচারিক প্রক্রিয়ায় দায়ীদের খালাস দেওয়া হয় এবং ভাঙা মসজিদের স্থানে মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। পাকিস্তান মনে করে, এই অবস্থান ভারতের রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের পরিচায়ক।