বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘনের দায়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করে ব্রিটিশ ফরেন অফিসের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার ‘গ্লোবাল বাংলাদেশীজ এলায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটস (জিবিএএইচআর)’-এর উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহবায়ক মানবাধিকার সংগঠক সাংবাদিক শামসুল আলম লিটন।
সমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে গুমের শিকার বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, জিবিএএইচআর-এর যুগ্ম আহবায়ক মেজর (অব.) সৈয়দ সিদ্দিক, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকে’র সভাপতি মুসলিম খান, ফাইট ফর রাইট এর সভাপতি রায়হান উদ্দিন, সেন্টার ফর দ্যা ডেমোক্রেটিক অ্যাণ্ড গুড গভর্নেন্স-এর সেক্রেটারি আব্দুল কাইয়ুম, ইকুয়াল রাইট্স ইন্টার ন্যাশনালের সেক্রেটারী নওশিন মোস্তারি মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার বাংলাদেশকে গুম-খুন ও একনায়কতন্ত্রের এক ভয়াল জনপদে পরিণত করেছে। মায়ের চোখের সামনে থেকে সন্তানকে, বোনের সামনে থেকে ভাইকে, স্ত্রীর সামন থেকে স্বামীকে, সন্তানের সামন থেকে বাবাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে গুম-খুন করা হচ্ছে। শত শত পরিবারের বেঁচে থাকার অবলম্বন ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। সরকারী বাহিনীর পরিচয়ে প্রতিদিন বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও মতপ্রকাশকারীদের তুলে নিয়ে শুধু নির্যাতনই করছে না, খুন করতেও দ্বিধা করছে না । বক্তারা বাংলাদেশকে একটি অঘোষিত বৃহৎ কারাগার উল্লেখ করে বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো রাষ্ট্র নেই যেখানে বিরোধী দল অথবা মতপ্রকাশের বিরোধিতার কারণে হাজার হাজার মামলা হয়। বাবা’র সরকার বিরোধীদলের সাথে সম্পৃক্ত থাকা অথবা মতপ্রকাশের কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী স্ত্রী সন্তানকে তুলে নিয়ে যায়, ভাইয়ের কারণে ভাইকে, মায়ের কারণে ছেলেকে, ছেলের কারণে মাকে আটকে রাখা হয়।
সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক।
গুমের শিকার নির্যাতিত সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল সমাবেশে তাকে অপহরণ ও গুম থাকাকালীন এক বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অমানবিক আচরণ, নিষ্ঠুরতা ও নির্যাতনের বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি ও পাপিয়া কাণ্ডের মতো দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণেই শেখ হাসিনা সরকার ও তার মাফিয়ারা আমাকে গুম ও হত্যাপ্রচেষ্টা চালায়। গুম থাকা অবস্থায় বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, মাফিয়ারা তাদের স্বার্থে দেশকে বিদেশিদের কাছে বিকিয়ে দিয়েছে। তিনি দেশী-বিদেশী সকলের প্রতি বাংলাদেশে গুমের মতো মানবতাবিরোধী সকল অপরাধের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হবার আহবান জানান।
সমাবেশ শেষে গ্লোবাল বাংলাদেশীজ এলায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটস নেতৃবৃন্দ বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনের কার্যালয়ে স্মারকলিপি পেশ করেন। পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
সমাবেশে নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকে সহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকে’র সহ সাধারন সম্পাদক এবাদুর রহমান, রায়হান আহমদ, মানবাধিকার কর্মী মো: ফজল আহমদ, জুনেদ আহমদ, এম আশরাফ উদদীন, ফখরুল মিয়া, আলী আহমদ, মো: শরিফ আহমেদ মুর্শেদ, রোহান তারিক, কামরু হাসান ভূঁইয়া, জাহিদুর হক নোমান, সারোয়ার হোসেন মুর্শেদ, রফিক আহমদ, এম এ শামীম, কামাল হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম, আবু রেদওয়ান, নাইম, রোহান, মো: শাহজাহান আহমদ, মো: জাকিরুল ইসলাম, মো: সিরাতুল ইসলাম আবির, রবিউল ইসলাম তামিম, মো: আবদুল আহাদ, ফাহিম আহমদ, মো: আশরাফুল ইসলাম, শাহরিয়ার কামাল আজাদ, নন্দন কুমার দে, জুবায়ের আহমেদ, রোকতা হাসান,মো:ওসমান গনি,ইমাম হোসেন, ইয়াজ কাওসার, তাহমিনা আক্তার, সালেহ হোসাইন, মাহমুদুল হাসান, মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ, মোহাম্মদ ফাহিদুল আলম, দিপা বেগম, তানভিরুর রাশিদ, হানিফ রাব্বানি, বুরহান উদ্দিন, ফেরদৌস আক্তার রুন, মহম্মদ বদরুল ইসলাম, সালেহ হোসাইন, আজিজুল রহমান, বুরহান উদ্দীন, মোহাম্মদ হানিফ রাব্বানী মিলাদ, মিজানুর রহমান মাছুম, মহিউদ্দিন আহমেদ, আফতাব উদ্দিন আলভী, নাইমুল ইসলাম রিফাত, মোছা ইমা বেগম, তানভির উর রশিদ, শাহরিয়ার কালাম আজাদ, আশরাফুল আলম, মাহফুজ আহমদ চৌধুরী, তোফায়েল আহমদ, এডভোকেট রোকশানা আক্তার ও আবু রেদওয়ান প্রমূখ।