গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু প্রকল্প স্থগিত করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নতুন প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রেও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়ার পরও একটি প্রকল্প বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) অন্তর্র্বতী সরকারের পঞ্চম একনেক সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় আগে অনুমোদিত একটি প্রকল্প বাতিলের প্রস্তাব করেছে পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। কার্যতালিকা সূত্রে জানা গেছে, একনেক সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মোট ১৫টি প্রকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। এর মধ্যে ৮টি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক অনুমোদিত ৬টি প্রকল্প একনেক সভাকে অবহিত করার জন্য উপস্থাপন করা হবে। বাকি একটি অনুমোদিত প্রকল্প বাতিলের জন্য প্রস্তাব করা হবে।
সব মিলিয়ে অর্থনৈতিকভাবে অলাভজনক এবং অপ্রয়োজনীয় ৪০টি প্রকল্প বাদ দেওয়া বা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে সিলেট বিভাগের দুইটি প্রকল্প। মৌলভীবাজারের লাঠিটিলা বনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক শীর্ষক প্রকল্প ও সুনামগঞ্জ জেলার সঙ্গে নেত্রকোনার সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে হাওরে উড়ালসড়ক নির্মাণের প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
বাতিলের অপেক্ষায় থাকা প্রকল্পগুলোর মধ্যে আরও আছে সুনামগঞ্জ জেলার সঙ্গে নেত্রকোনার সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে হাওরে উড়ালসড়ক নির্মাণের প্রকল্প। সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আগ্রহে নেওয়া প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের এক সভায় প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, হাওরে উড়ালসড়ক নির্মিত হলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর প্রভাব পড়বে।
একনেক সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের লাঠিটিলা বনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক শীর্ষক প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গত বছরের নভেম্বরে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। অথচ লাঠিটিলা বনটি সংরক্ষিত হওয়ায় সেখানে সাফারি পার্ক স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছিলেন পরিবেশবাদীরা। তাদের আপত্তি উপেক্ষা করে সাফারি পার্ক স্থাপনের জন্য নেওয়া প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত বছর পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ভেঙে পাহাড় ও গাছ কেটে তৎকালীন পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের নিজের নির্বাচনী এলাকায় বন ধ্বংসের এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ কারণে পরিবেশবাদীদের আপত্তি উপেক্ষা করে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় সরকার। তবে সরকার পরিবর্তনের পর পাল্টে যায় দৃশ্যপট। প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার। এ জন্য গঠন করা হয় চার সদস্যের একটি কমিটি।