মন্দির ভাঙচুর করা ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় পাকিস্তানের

মন্দির ভাঙচুর করা ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় পাকিস্তানের ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটারে ) সম্প্রতি বাংলাদেশে একটি মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে এমন একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ভাঙচুরের ঘটনার ভিডিওটিতে টুপি, পাঞ্জাবি পরিহিত অসংখ্য ব্যক্তিকে মন্দির ও মূর্তি ভাঙচুর করতে দেখা যাচ্ছে। তবে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, বরং পাকিস্তানের।

বাংলাদেশের তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান (ফ্যাক্ট চেক) রিউমর স্ক্যানার বলছে, মন্দির ভাঙচুরের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। এ ঘটনা ২০২১ সালে পাকিস্তানে ঘটেছিল।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মন্দির ভাঙচুরের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, বরং ২০২১ সালে পাকিস্তানের মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা। যা বাংলাদেশের মন্দির ভাঙার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে সংযুক্ত ভিডিও পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত মন্দিরে হামলার ভিডিওর সঙ্গে ওই ভিডিওর মন্দির এবং হামলাকারী ব্যক্তিদের মিল রয়েছে। যা থেকে এটি স্পষ্ট যে, ভাইরাল ভিডিওটি একই ঘটনার তবে ভিন্ন ডিভাইস দিয়ে ধারণ করা।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে পাকিস্তানি গণমাধ্যম দ্য ডনের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ৫ আগস্ট Mob ransacks temple after minor boy gets bail in desecration caseশীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, মাদরাসার লাইব্রেরিতে প্রস্রাব করার কারণে পাকিস্তানের লাহোর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রহিম ইয়ার খান জেলার ভোঙ্গে শহরে ৮ বছরের এক হিন্দু শিশুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে নাবালক হওয়ায় তাকে জামিনে ছেড়ে দেন পাকিস্তানের আদালত। এ ঘটনার জেরে ওই এলাকায় একটি মন্দিরে স্থানীয় মুসলিম জনতা হামলা চালায়। আলোচিত ভিডিওটি ওই মন্দিরে হামলার ঘটনারই।

এ ছাড়াও একই ঘটনায় ২০২১ সালের ৫ আগস্ট পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের করা একটি এক্স পোস্টও খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটি থেকে জানা যায়, ভাঙচুরের শিকার মন্দিরটি একটি গণেশ মন্দির ছিল। এ ছাড়াও তার পোস্টের মাধ্যমে তিনি সরকারের পক্ষ থেকে মন্দিরটি সংস্কার করে দেওয়ার কথাও জানান।

পরবর্তী অনুসন্ধানে ২০২১ সালের ৪ আগস্ট পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফের সাবেক সংসদ সদস্য ড. রমেশ কুমার ভাঙ্কওয়ানির করা একটি এক্স পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটিতে সংযুক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবির ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।

সুতরাং, বাংলাদেশে মন্দির ভাঙচুরের চিত্র দাবিতে পাকিস্তানের পুরোনো ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।