মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিনকেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন,‘চীন ইউক্রেনের হামলায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম অবিলম্বে রাশিয়াকে সরবরাহ বন্ধ না করলে ওয়াশিংটন ব্যবস্থা নেবে।
তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চীন সাগরের উপর চীনের দাবি এবং মার্কিন রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি গুপ্তচর বেলুনের আবির্ভাব সম্পর্ককে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করে।
বেইজিংয়ে বিবিসির সাথে কথা বলার সময় মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, তিনি তার প্রতিপক্ষদের কাছে স্পষ্ট করেছেন যে, শীতল যুদ্ধের পর ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকির পেছনে ইন্ধন যোগাচ্ছে চীন। এর প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র কী ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত তা অবশ্য তিনি খোলসা করেননি। এর পাশাপাশি তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানাইলের ওষুধের সরবরাহ বন্ধ করার প্রচেষ্টার জন্য বেইজিংয়ের প্রশংসা করেন। চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানাইলের প্রধান উৎস। হোয়াইট হাউস বলেছে, এই ওষুধ সারা দেশে জনস্বাস্থ্য সংকট সৃষ্টি করছে। ব্লিনকেনজোর দিয়ে বলেন, বেইজিং মধ্যপ্রাচ্যে একটি ‘গঠনমূলক’ ভূমিকা পালন করতে পারে। ইরানের সাথে তার সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে ইসরাইলের সাথে চলমান সংঘর্ষকে রোধ করতে সহায়ক ভূমিকা নিতে পারে। গত ১০ মাসের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার চীন সফর করলেন ব্লিনকেন। গত বছরের প্রচণ্ড উত্তেজনার পরে সম্পর্কের ক্ষত নিরাময়ে নেমেছে উভয় পক্ষই।
শি- এর মতে, আমেরিকা যদি ‘চীনের উন্নয়নে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নেয় তবে সম্পর্ক সত্যিই স্থিতিশীল হতে পারে, আরও ভাল হতে পারে এবং এগিয়ে যেতে পারে । ব্লিনকেন বিবিসিকে বলেছেন যে, চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ উভয়ের মধ্যে ‘উন্নত সম্পর্কের’ একটি মূল পথ হবে বেইজিং বা এর কিছু উদ্যোগ বন্ধ করা যা রাশিয়াকে আরও যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করতে সহায়তা করে। উপাদানগুলোর মধ্যে মেশিন টুলস, মাইক্রো-ইলেক্ট্রনিক্স এবং অপটিক্স এর মতো আইটেম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ব্লিনকেনের মতে, এটি রাশিয়াকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তার আগ্রাসন স্থায়ী করতে সহায়তা করছে, রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে এটি ইউরোপের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকিও তৈরি করছে। বিবিসির সাথে তার সাক্ষাৎকারে, ব্লিনকেন বলেন যে, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সামরিক যোগাযোগসহ আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ রয়েছে এমন ক্ষেত্রে দুটি দেশ বৃহত্তর সহযোগিতা গড়ে তুলতে পারে কিনা তা দেখা গুরুত্বপূর্ণ।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি আইন পাস করেছে যা চীনা মালিকানাধীন অত্যন্ত জনপ্রিয় ভিডিও অ্যাপ টিকটককে বিক্রি করতে বাধ্য করবে বা আমেরিকায় নিষিদ্ধ করা হবে। কিন্তু এমন কোনো বিষয় ব্লিনকেনের সাথে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকে ওঠেনি। শি শুক্রবার বিকেলে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে ব্লিনকেনের সাথে দেখা করেছিলেন। তিনি সম্মত হয়েছেন যে, নভেম্বরে তার মার্কিন প্রতিপক্ষ জো বাইডেনের সাথে দেখা করার পর থেকে উভয় পক্ষের সম্পর্কে ‘কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি’ দেখা গেছে।
সূত্র : বিবিসি