রাইজিং ডেস্ক :: বসত ঘরে ঢুকে মা ছেলেকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় দুই দিনের মাথায় রহস্য উন্মোচন হলো। আইফোনের লোভে মা ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে দাবি পুলিশের।
এই ঘটনায় এক কিশোরকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান পিপিএম ।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত একজনকে ভোরে ঢাকার সাভার থেকে আটক করা হয়। আটককৃত কিশোর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে।
গত মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) জেলা সদরের এসপি বাংলো সংলগ্ন হাসননগর এলাকার একটি ঘর থেকে ফরিদা বেগম (৪৫) ও তার ছেলে মিনহাজ উদ্দিনের মরদেহ দু’টি উদ্ধার করা হয়। নিহতদের গ্রামের বাড়ি জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায়।
ওইদিন সকাল ৮ টার দিকে বাসায় কাজের মহিলা এসে ঘর খোলা ও মা-ছেলের মরদেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে স্বজনদের খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে মরদেহ উদ্ধার করে।
ঘটনার পর সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, সোমবার (২৮ অক্টোবর) দিনগত রাতে কোনো এক সময় মা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সময় ঘরের দরজা খোলা ছিল, মরদেহের শরীরে বটি-দায়ের আঘাত রয়েছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, আইফোন চুরির জন্য বন্ধুকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়। আটক হত্যাকারী অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়াতে তার নাম ঠিকানা প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
তিনি আরো জানান, সপ্তাহ খানেক আগে ওই কিশোর তার এক বন্ধু মিলে নিহত মিনহাজের আইফোন ১১ মডেলের একটি মোবাইল চুরির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকালে মিনহাজের ঘরে প্রবেশ করে তারা। মোবাইল চুরির চেষ্টাকালে মিনহাজ ঘুমে থেকে জেগে টের পাওয়ায় তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে পাশে থাকা বটি দা দিয়ে মিনহাজের শরীরে দুটি কোপ দেওয়া হয়। এসময় মিনহাজ আঘাত পেয়ে চিৎকার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। চিৎকার শুনে মিনহাজের মা ফরিদা বেগম এগিয়ে আসলে তাকে আরেকটি বটি দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলেই মা ছেলে নিহত হোন। পরে তারা ঘরে থাকা টাকা এবং স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যায়। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই ঘটনায় সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে ডাবল মার্ডারের ঘটনা ঘটতে পারে। সিআইডি ও পিবিআই তলব করে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তাছাড়া বাসায় থাকা খালাতো বোনের ছেলে ফয়সাল ও ফাহমিদ পলাতক রয়েছে।
নিহত ফরিদা বেগম খালা-চাচি দুই সম্পর্কে আত্মীয় হন জানিয়ে রুপজ আহমদ নামে এক যুবক বলেন, তিনি ঢাকায় থাকেন। বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। সকালে তাদের কাছে ফোন যায় কে বা কারা তাদের ঘরে অ্যাটাক করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে এসে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেখতে পান। যেহেতু এসপির বাংলোর কাছেই ঘটনা, তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে চুড়ান্ত শাস্তির দাবি জানান তিনি।