রাইজিংসিলেট- মুইজু-মোদি`র সম্পর্কে বরফ গলছে। চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজু অবশেষে ভারতের প্রতি নমনীয় হয়েছেন। মোদি-মুইজুর সম্পর্কের বরফ গলছে। দেশটির অর্থনীতিতে ভারতের অবদান স্বীকার করলেন। বললেন, ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি হলো আমাদের দুই দেশের জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক।
উল্লেখ্য, ভারত সফরে সোমবার এ কথা বলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজু। মালদ্বীপ মারাত্মকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে সঙ্কটে। এমন সময় দুই দেশের সম্পর্ক ও বাণিজ্যিক চুক্তিকে শক্তিশালী করতে মালদ্বীপকে কমপক্ষে ৬৩০০ কোটি রুপি সহায়তা দিতে রাজি হয় ভারত। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য হিন্দু ও হিন্দুস্তান টাইমস। রিপোর্টে বলা হয়, মোহাম্মদ মুইজু বলেছেন, মালদ্বীপের জন্য পর্যটন মার্কেটের সবচেয়ে বড় উৎসের একটি হলো ভারত। তিনি আশা করেন এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে অধিক পরিমাণ ভারতীয় পর্যটক সফর করবেন।
হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনার পর তিনি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। বলেন, ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে সম্পর্ক কয়েক শতাব্দীর। ভারত সফরকে তিনি উল্লেখযোগ্য হিসেবে অভিহিত করেন। গত বছর প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে মালদ্বীপের কয়েকজন মন্ত্রী মন্তব্য করেন। তাতে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অনলাইনে শুরু হয় ‘বয়কট মালদ্বীপ’ প্রচারণা। ওই সময় সেলিব্রেটিসহ অনেক ভারতীয় ঝাঁপিয়ে পড়েন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তারা মালদ্বীপের পরিবর্তে ভারতের ভিতরে লঙ্কাদ্বীপের মতো নয়নাভিরাম পর্যটন স্পটগুলো বেছে নেয়ার আহ্বান জানান। এসব বিষয়ে মুইজু বলেন, মালদ্বীপের বহু মানুষ পর্যটনের জন্য, চিকিৎসার জন্য, শিক্ষার জন্য এবং আরও অনেক কারণে ভারত সফর করেন। একই সময়ে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মালদ্বীপ সফরে যান। তা মালদ্বীপের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। ভারত হলো আমাদের পর্যটন বাজারের অন্যতম বৃহৎ উৎস। আমরা মালদ্বীপে অধিক পরিমাণ ভারতীয় পর্যটককে স্বাগত জানাই। এতে আমাদের জনগণের সঙ্গে বোঝাপড়া ভাল হবে।
গত বছর ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণা চালিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মুইজু। তারপর এটাই ভারতে তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। নির্বাচিত হয়েই তিনি তার দেশে নিয়োজিত ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারে নয়া দিল্লির প্রতি আহ্বান জানান। এর ফলে মালদ্বীপ এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্কে টান ধরে। গত বছর নভেম্বরে ক্ষমতায় বসেন মুইজু। তারপর থেকে মনে করা হয়, তিনি খুব বেশি চীনপন্থি। এবার ভারত সফরে তিনি রোববার এসেছেন সন্ধ্যায়। সঙ্গে রয়েছেন ফার্স্টলেডি সাজিদা মোহামেদ এবং প্রতিনিধি দল। তাকে রাষ্ট্রপতি ভবন কমপ্লেক্সে গার্ড অব অনার দেয়া হয়েছে সোমবার। পরে দ্বিপক্ষীয় বিস্তৃত বিষয়ে পর্যালোচনা করতে হায়দরাবাদ হাউসে মোদির মুখোমুখি বসেন মুইজু। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে ভারত ও মালদ্বীপ একসঙ্গে কাজ করবে, যাতে উভয় দেশ উপকৃত হয়। তিনি বলেন, আমরা ভারতের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার সিদ্ধান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। এতে দুই দেশই উপকৃত হবে। পর্যটন খাতে বাড়বে ভারতের বিনিয়োগ।