ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৭ মার্চ ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আরো
  5. খেলার খবর
  6. গণমাধ্যম
  7. চাকরির খবর
  8. জাতীয়
  9. দেশের খবর
  10. ধর্ম পাতা
  11. পরিবেশ
  12. প্রবাস
  13. প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  14. বিজ্ঞান প্রযুক্তি
  15. বিনোদন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যাদুকাটা নদীর তীরে গ ঙ্গা স্না ন ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত

rising sylhet
rising sylhet
মার্চ ২৭, ২০২৫ ৮:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর তীরে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শ্রীশ্রী অদ্বৈত জন্মধাম পণাতীর্থে গঙ্গাস্নান ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতি বছরের নায় চৈত্র মাসে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর রাজারগাঁও সংলগ্ন স্থানে গঙ্গাস্নান ও পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে লাখো ভক্তের সমাগম হয়েছে এবং গ্রামীণ মেলা বসেছে।

গঙ্গাস্নান উপলক্ষে যাদুকাটা নদীর তীরে গ্রামীণ মেলায় নানা পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এদিকে একই সময়ে প্রতিবছর যাদুকাটার তীরের পার্শ্ববর্তী  এলাকায় লৌকিক পীর খ্যাত সাধক শাহ আরেফিনের মাজারেও তিন দিনব্যাপী ওরস হয়, বসে মেলা। কিন্তু এবার সেই ওরস ও মেলা হচ্ছে না। একই এলাকায় দুই ধর্মের লোকজনের মিলনমেলা উৎসবে পরিণত হত। তাই অন্য বছরের চেয়ে ভক্তসমাগক কিছু কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পঞ্জিকামতে বুধবার রাত ১১টা ১ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ড পর্যন্ত চৈত্রমাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে পণাতীর্থে গঙ্গাস্নান ও প্রয়াত পূর্ব পুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনায় তর্পণ করা হচ্ছে।

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহাম্মেদ বলেন, তাহিরপুরের যাদুকাটা নদীর তীরে পণাতীর্থে গঙ্গাস্নান ও বারুণী মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি রয়েছে।

জানা যায়, আনুমানিক ১৪৩৪ খ্রিস্টাব্দের মাঘ মাসে শ্রীশ্রী অদ্বৈত আচার্য বর্তমান তাহিরপুর উপজেলার লাউড় পরগণার অন্তর্গত নবগ্রামে আবির্ভূত হন। তবে নবগ্রাম বহু আগেই যাদকাটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে অদ্বৈত আচার্য-প্রভুর মন্দির গড়ে উঠেছে নবগ্রাম সংলগ্ন রাজারগাঁওে। বাল্যকালেই শ্রী অদ্বৈত আচার্য পণাতীর্থের মহিমা প্রকাশ করেছিলেন।

‘অদ্বৈত প্রকাশ’ গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, একদিন রাত্রিতে অদ্বৈত প্রভুর জননী নাভাদেবী স্বপ্নে দর্শন করেন যে, তিনি নানা তীর্থ জলে স্নান করছেন। প্রভাতে ধর্মশীলা নাভাদেবী স্বপ্নের কথা স্মরণ করে ও তীর্থ গমনের বিবিধ অসুবিধার বিষয় চিন্তা করে বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন। এমন সময়ে পুত্র অদ্বৈতাচার্য সেখানে উপস্থিত হয়ে মাতার বিমর্ষতার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তাঁর মাতা তাঁকে স্বপ্ন দর্শনের কথা অবহিত করেন। মাকে বিষণ্ণ দেখে তিনি পণ করেন এই স্থানেই তাবৎ তীর্থের আবির্ভাব করাবেন। অদ্বৈতাচার্য মন:শক্তির অসীম প্রভাব ও যোগবলের অসাধারণ শক্তিতে সকল তীর্থসমূহকে আকর্ষণ করে লাউড়ের এক শৈলের উপর আনয়ন করেন। ঐ শৈলখণ্ডের একটি ঝরণাতীর্থবারি পরিপূরিত হয়ে ঝরঝর করে পড়তে লাগলো। অদ্বৈত জননী তাতে স্নান করে পরিতৃপ্তি হলেন। এইভাবে লাউড়ে এই তীর্থের উৎপত্তি হয়। অদ্বৈতের ন্যায় তীর্থসমূহও (সপ্ততীর্থ) পণ করেছিলো মধুকৃষ্ণা এয়োদশী যোগে এখানে তাদের আবির্ভাব হবে। সেই থেকে পণাতীর্থ হিসেবে পরিচিত।  পণাতীর্থে গঙ্গাস্নান ও বারুণী মেলা নিরাপদে সম্পন্ন করতে যাদুকাটা নদীর তীর এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। কোথাও কোন বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।

জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ-বাজিতপুর গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ দেবনাথ বলেন, সবর্তীর্থের সেরাতীর্থ ‘পণাতীথর্’। তাই অন্যতীর্থে বার বার গেলেও পণাতীর্থে একবার হলে যেতে হয়। আমি সুযোগ পেলে প্রতি বছরই যাওয়ার চেষ্টা করি। এবারও পরিবারের লোকজনকে নিয়ে পণাতীর্থে গিয়েছিলাম। অন্য বছরে চেয়ে এই বছর মানুষ কিছু কম হয়েছে। তবে এই বছরের পরিবেশ অনেক ভাল ছিল। অন্য বছরের মত রাস্তা-ঘাটে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়নি।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার রুপসপুর গ্রামের বাসিন্দা চৌধুরী ভাস্কর হোম বলেন, পণাতীর্থের নাম ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছিলাম। আমি এই বছর প্রথম পণাতীর্থে গিয়েছিলাম। অনেক ভক্তের সমাগম হয়েছে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না। সরু রাস্তা-ঘাটের কারণে রাস্তায় অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। যদিও সড়কের পাশাপাশি নদীপথে অনেক মানুষ এসেছিল। পণাতীর্থে যাওয়ার রাস্তাঘাট দ্রুত প্রশস্ত করা প্রয়োজন।

হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ উপজেলার জলসখা গ্রামের বাসিন্দা নির্মল দাস বলেন, এই বছর আবহাওয়া অনেক ভালো ছিল। এই তীর্থের স্থানটি অত্যন্ত চমৎকার, সীমান্তের মেঘালয়ের পাহাড়ের কাছাকাছি। দুই দিনে গঙ্গাস্নান ও তর্পণের অনেক সময় পাওয়ায় দূর থেকে লোকজন আসার সুযোগ পেয়েছে। এবং নিরাপদে সবকিছু করতে পেরেছেন।

অদ্বৈত জন্মধাম কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অদ্বৈত রায় বলেন, পণাতীর্থ ও বারুণীমেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। দেশ-বিদেশের পুণ্যার্থীদের সুবিধা ও যানজট নিরসনে ওয়ানওয়ে রাস্তায় যানবাহন চলাচল করছে। তাই তেমন কোন অসুবিধা হচ্ছে না। ভক্তসমাগক কিছু কম হয়েছে।

শাহ আরেফিন মাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলম সাব্বির জানান, এবার তারা মাজারে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করেননি। শবে কদর ও রমজানের পবিত্রতার কারণে শাহ আরেফিনের ওরস ও মেলা বন্ধ আছে। কমিটির সবাই বসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।