যুবলীগ নেতার ভাইয়ের গুলিতে রিকশাচালক নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলাটিতে প্রধান আসামি করা হয়েছে
পাবনা ঈশ্বরদী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনকে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
নিহত মামুন হোসেনের (২৬) মা লিপি খাতুন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মামলাটি করেন। মামলায় কামাল উদ্দিনের ভাই আনোয়ার হোসেনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও তিন থেকে চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রাত দেড়টার দিকে নিহত ব্যক্তির মা থানায় হাজির হয়ে মামলাটি করেছেন। আসামিদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
গত বুধবার রাতে উপজেলার পশ্চিম টেংরি কড়ইতলা এলাকায় ইঞ্জিনচালিত নসিমন চালকের সঙ্গে এক লেগুনাচালকের বিরোধ তৈরি হয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে কয়েক যুবক সেখানে এসে বিরোধে জড়ান। স্থানীয় লোকজনের দাবি, তাদের মধ্যে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনের ভাই আনোয়ার হোসেন পিস্তল বের করে গুলি চালান। এতে মামুন হোসেন নামের এক রিকশাচালক নিহত হন।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রকি হোসেন ও সুমন হোসেন নামের আরও দুইজন আহত হন।
ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার সন্ধ্যায় নিহত ব্যক্তির লাশ দাফন করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রকি হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সুমন হোসেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর ঈশ্বরদী থানা চত্বরে লাশ রেখে বিক্ষোভ করেন নিহত মামুনের স্বজনরা। তারা থানার ভেতর ও থানার প্রধান ফটকের সামনে কাউন্সিলর কামাল ও তার ভাই আনোয়ারের ফাঁসি দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এদিকে রিকশাচালককে গুলিতে খুনের ঘটনায় বুধবার গভীর রাতে আনোয়ারের বড় ভাই ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন এবং আনোয়ারের ছেলে হৃদয় হোসেনকে তাদের শৈলপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক’ আটক করে নিয়ে গেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তবে ঈশ্বরদী থানা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সংস্থা দুজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
কাউন্সিলর কামালের স্ত্রী শারমিন সুলতানা স্বপ্না বলেন, বুধবার গভীর রাতে কয়েকজন সাদা পোশাকে কিছু লোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে আমাদের বাসায় আসে। তাদের সঙ্গে পোশাক পরা পুলিশও ছিল। তারা আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে চলে গেছে। সেই সঙ্গে তার ভাতিজা হৃদয় হোসেনকেও ধরে নিয়ে যায়। তবে কী কারণে, কোথায় নিয়ে যাচ্ছে সেটাও বলেননি তারা।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, আনোয়ার হোসেন পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য। তবে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিক দাবি করেন, আনোয়ার হোসেন যুবলীগের সদস্যপদে নেই। তিনি ভাইয়ের পরিচয়ে নিজেকে যুবলীগের সদস্য দাবি করেন।