গত ৭ জুন ঈদুল আজহার দিন গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপিকে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের সঙ্গে কোনও ধরনের বিরোধে না জড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা করার পরামর্শ দিয়েছেন ।
অন্তর্র্বতী সরকারের সঙ্গে সমঝোতার ব্যবস্থা করতে বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি বলেছেন, তাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ কি? তারা কি আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নাকি?
বুধবার (১১ জুন) গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুজন্য সদস্য বলছেন, খালেদা জিয়ার পরামর্শ হচ্ছে- নির্বাচন তারিখ ইস্যুতে অন্তর্র্বতী সরকারের সঙ্গে বিএনপির বিরোধে যাওয়া ঠিক হবে না। কোনও সমস্যা থাকলে সেটা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করতে হবে। তাছাড়া ইতোমধ্যে ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে সেটা আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা করে নিতেও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
চারদিনের সফরে এই মুহূর্তে লন্ডনে আছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান ড. ইউনূস। আগামী ১৩ জুন সেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসার কথা রয়েছে তার।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা এতদিন সরকারের সঙ্গে যে এজেন্ডাগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছি, সেগুলো তো দলের স্থায়ী কমিটিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে করেছি। সেখানে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সভাপতিত্ব করেছেন। আমরা মনে করি, ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকে সেই বিষয়গুলোই প্রাধান্য পাবে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনের তারিখের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে এই বৈঠকে। এছাড়া সংস্কার নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বিএনপির যেসব বিষয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে, তা নিয়েও কথা হবে। তবে, সাম্প্রতিকালে চট্রগ্রাম বন্দর, মিয়ানমার সীমান্তে করিডোর দেওয়া নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে, বৈঠকে সে বিষয়গুলো উত্থাপিত হওয়ার সম্ভাবনা কম; সময় থাকলে আলোচনা হতে পারে।
দলটির নেতারা আরও বলছেন, সরকারের সঙ্গে বিএনপির মতপার্থক্য এখন মাত্র একটি জায়গায়। সরকার প্রধান ড. ইউনূস বলেছেন, আগামী বছরের এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। আর বিএনপির দাবি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের। এখন সেটা দুই পক্ষকে ছাড় দিয়ে এক-দুই মাস এদিক-সেদিক করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিগত কয়েকটি বৈঠকে এটাই বলে আসছে বিএনপি।
ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যকার সম্ভাব্য বৈঠকটিকে এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বলে আখ্যা দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (১০ জুন) তিনি বলেছেন, আমি মনে করি, জাতীয়ভাবে এবং আন্তর্জাতিকভাবেও এই বৈঠকের গুরুত্ব অনেক বেশি। এই মিটিংটা হলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে এবং অনেক কিছু সহজ হয়ে যেতে পারে; নতুন ডাইমেনশন সৃষ্টি হতে পারে। এখন এটা নির্ভর করবে আমাদের নেতৃবৃন্দের (মুহাম্মদ ইউনুস-তারেক রহমান) ওপর, তারা কীভাবে সেই সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যাবেন। আমরা আমাদের দলের তরফ থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে সম্পূর্ণ অথরিটি দিয়েছি, তার সাফল্য প্রার্থনা করেছি।