প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন,প্রবাসী ও রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সমস্যা সমাধানে শিগগিরই প্রবাসী কল্যাণ সেল গঠন করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতীয় পর্যায়ে, বিভাগীয় পর্যায়ে, জেলা পর্যায়ে ও উপজেলা পর্যায়ে পৃথক পৃথক কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ সেল প্রবাসীদের সমস্যা তড়িৎগতিতে সমাধানে সর্বদা তৎপর থাকবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে (২১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে লেশন লার্নিং ফরম দ্য স্ট্রেঞ্জথেন অ্যান্ড ইনফরমেটিভ মাইগ্রেশন সিস্টেম (এসআইএমএস) প্রকল্প কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
হ্যালভেটাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর বেনঞ্জামিন ব্লুলু মেন্থালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পার্লামেন্টারি ককাসের সদস্য তানভীর শাকিল জয়, জনশক্তি কমর্সংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর, বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শফিকুর রহমান বলেন, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ পুরাতন আমলের যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া তা নতুন প্রজন্মের কাজে লাগছে না। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহে আধুনিক যুগোপযোগী যন্ত্রপাতি স্থাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শুধুমাত্র প্রবাসীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলেই হবে না, প্রশিক্ষকদের ও প্রতিনিয়ত আধুনিক প্রযুক্তির সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আমি আশা করছি, আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে কিছুদিনের মধ্যে আমাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ ঢেলে সাজাতে সক্ষম হবো।
প্রবাসীদের কল্যাণে সরকার কী কী করছে তা জনগণ জানতে পারে না বলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী কর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দেয় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। কল্যাণ বোর্ড প্রবাসীর পরিবারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সুদৃঢ়করণের লক্ষ্যে তাদের প্রতিবন্ধী সন্তানদের উন্নয়নে ও সহায়তায় ভাতা দেওয়া হয়, যা প্রবাসীর পরিবারের অর্থবহ ও টেকসই কল্যাণ নিশ্চতকল্পে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
বিএমইটির ট্রেনিং প্রসঙ্গে প্রতিনিধিদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএমইটির মাধ্যমে মাত্র তিনদিনের প্রি-ওরিয়েন্টেশন কোর্স করা হয়। দ্রুত এটা আরও বাড়ানো হবে। প্রবাসীদের মোটিভেশন কাজ করতে হবে। তাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে কেন মানুষ বিদেশে যেতে চায়? বাংলাদেশে শিক্ষার হার বেড়েছে। সবাইকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করছে। তারপরও আরও কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, মানুষকে জানতে হবে তাদের জন্য কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে। বিদেশে যাওয়ার পরে তাকে কী করতে হবে, বিদেশে সে কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবে। দেশে ফেরত আসার পরে তার কী কী সুযোগ-সুবিধা আছে। প্রধানমন্ত্রীর মহতী উদ্যোগে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসীদের নানাবিধ সমস্যা সমাধানে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
সভায় বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিদের বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনাদের বক্তব্যে আমার অন্তরের কথা ফুটে উঠেছে। আপনাদের পরামর্শ যাতে কাজে লাগাতে পারি সেদিকে লক্ষ্যে রেখে আমরা কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করবো।
সভায় এসআইএমএস প্রকল্পের মাধ্যমে অভিবাসী সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনাবিষয়ক বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। এসব প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা কাজে লাগাতে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের ওপর জোর দেন এ খাতের সংশ্লিষ্ট এনজিও প্রতিনিধিরা।