• ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

শরণখোলায় ব্রী-৭১ ও ৭৫ ধানে বাম্পার ফলনে চাষির মুখে সোনালী হাসি

risingsylhet.com
প্রকাশিত নভেম্বর ১২, ২০২৩
শরণখোলায় ব্রী-৭১ ও ৭৫ ধানে বাম্পার ফলনে চাষির মুখে সোনালী হাসি

বাগেরহাটের শরণখোলায় আগাম জাতের ব্রী-৭১ ও ব্রী-৭৫ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে ফসল কাটাও শুরু করেছেন চাষিরা। উপকূলীয় শরণখোলায় দুই-তিন বছর ধরে চাষ হচ্ছে এই আগাম জাতের ধানের। চাষি-শ্রমিক সবার চোঁখে-মুখে এখন সোনালি হাসি। আগাম জাতের এ ধান ওঠার পরে একই জমিতে সরিষা, সূর্যমুখী, ভুট্টা, গমসহ নানা জাতের শতিকালিন শাক-সবজি চাষ করে কৃষকরা আরও লাভবান হবেন।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মাঠে মাঠে সোনালি ধানে দোলা। হাসি মুখে সেই পাকা ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষি শ্রমিকরা দল বেধে কাস্তে হাতে মাঠে পাকা ধান কাটায় ব্যবস্ত সময় পার করছেন। এক বিঘা জমি চাষ থেকে শুরু করে ফসল কাটা পর্যন্ত কৃষকের খরচ হয়েছে প্রায় ১২-১৬ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ফলন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মন। আর বর্তমান বাজারে এক মণ ধাণ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা। এতে চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন। এই ধান চাষে আগ্রহও বাড়ছে চাষিদের।

শরণখোলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোস্তফা মশিউল আলম জানান, আগাম জাতের ব্রি-৭১ ও ব্রি-৭৫ ধানের চারা রোপণের পর থেকে ১১০ থেকে ১১৫ দিনের মধ্যেই ফসল কাটার উপযোগী হয়। রোগবালাই ও পোকা মাকরের আক্রমণ কম হওয়ায় এবার আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন চাষিরা। এ বছর উপজেলার চারটি ইউনিয়নে এবার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি-৭১ ও ব্রি-৭৫ আগাম জাতের ধান চাষ হয়েছে সাড়ে ৭শ বিঘায়। যেসব জমির ধান কাটা হয়েছে তার পরিমাপ করে দেখা গেছে বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ মন ফলন হয়েছে। যা বিগত বছরের তুলনায় ফলন অনেক ভালো।

উপজেলার কদমতলা গ্রামের চাষি আবুল মোল্লা, খোকন মোল্লা জানান, নজরুল ইসলাম হাওলাদার, কালাম খান ও অহেদ খান জানান গত দুই বছরে তারা এতো ফলন দেখেননি। তাদের জমির ফলন দেখে আগামীতে গ্রামের অনেকেই এই আগাম জাতের ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুর গ্রামের চাষি মাসুদ মীর জানান, তিনি এবার চার বিঘা জমিতে ব্রি-৭১ ও ব্রি-৭৫ আগাম জাতের ধান চাষ করে বেশ খুশি। কারণ তিনি তার দুই বিঘা জমিতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। ফসল পেয়েছেন প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মণ। এবছর যেভাবে ফলন হয়েছে তাতে আগামী বছর আরো বেশি জমিতে চাষ করবেন বলে জানান এই চাষি।

উপজেলার খোন্তাকাটা গ্রামের ধান ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন, ফারুক হোসেনসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, গত বছর এক মণ ধান কিনেছেন সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এবছর ধানের দাম আশানুরুপ। এবার সেই ধান ১ হাজার টাকা দরে মণ কিনতে হচ্ছে। কেবলমাত্র ধান কেনা শুরু করেছেন তারা। তারা ধান কিনে চাল তৈরী করে বিক্রি করে থাকেন। চাল তৈরীতে আরো সময় লাগবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকতা দেবব্রত সরকার জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা লাভবান হয়েছে। চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে। আগামীতে আরো বেশি জমিতে এই ধান চাষ করা হবে। এই আগাম জাতের ধান ওঠার পর একই জমিতে সরিষা, সূর্যমুখী, ভুট্টা, গমসহ শীতকালিন শাক-সবজি চাষ হবে। এতে এক জমিতে দুই-তিন ধরণের ফসল উৎপাদন করে কৃষকরা আরো বেশি লাভবান হচ্ছেন।

৮০ বার পড়া হয়েছে।