raising sylhet
ঢাকাসোমবার , ১৯ আগস্ট ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শেখ হাসিনাকে কি ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব?

rising sylhet
rising sylhet
আগস্ট ১৯, ২০২৪ ১:১৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রাইজিংসিলেট- শেখ হাসিনাকে কি ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব? গণঅভ্যুত্থানের মুখে সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তারপর থেকে তিনি দিল্লির একটি বাড়িতে অবস্থান করছেন। দেশত্যাগের পর থেকে বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন মহল থেকে তাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনার দাবি উঠেছে।

তবে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা কি আদৌ সম্ভব? দুই দেশের মধ্যে এমন কোনো চুক্তি আছে কি? যদি থাকেও ভারত কি দীর্ঘ দিনের মিত্র শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেবে? এমন সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিচারের স্বার্থে ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অনেক মামলা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় যদি সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমাদের তাদের (ভারতকে) অনুরোধ করতে হবে তাকে (শেখ হাসিনাকে) বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে। এটি ভারত সরকারের জন্য বিব্রতকর হবে। ভারত এটি জানে এবং আমি নিশ্চিত যে তারা এ বিষয়ে খেয়াল রাখবে।

© বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কি বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে?

হ্যাঁ। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ও ভারত একটি বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। দুই দেশের মধ্যে পলাতক বন্দি বিনিময় সহজ ও দ্রুত করতে ২০১৬ সালে এটি আবার সংশোধন করা হয়।

© বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তিতে কী বলা আছে?

চুক্তি অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তির নামে মামলা বা অভিযোগ দায়ের হয় বা তিনি দোষী সাব্যস্ত হন অথবা দেশের আদালতের কর্তৃক প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ করার জন্য তাকে ফেরত চাওয়া হয় তাহলে তাকে ফেরত দেবে বাংলাদেশ ও ভারত।

প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ বলতে চুক্তিতে সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ড হয় এমন অপরাধকে বলা হয়েছে। এর মধ্যে আর্থিক অপরাধও রয়েছে। তবে কোনো অপরাধ প্রত্যর্পণযোগ্য হওয়ার জন্য দ্বৈত অপরাধের নীতি অবশ্যই প্রযোজ্য হবে। এর মানে হলো কৃত অপরাধটি অবশ্যই দুই দেশে শাস্তিযোগ্য হতে হবে।

এ ছাড়া প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধের চেষ্টা, সহায়তা, প্ররোচনা বা অংশগ্রহণ করলেও এই অপরাধের সহযোগী হিসেবে ওই ব্যক্তিকে ফেরত দিতে হবে।

© চুক্তিতে কোনো ছাড়ের বিষয় আছে কি?

Advertisements

হ্যাঁ। চুক্তিতে বলা হয়েছে যে অপরাধটি ‘রাজনৈতিক প্রকৃতির’ হলে প্রত্যর্পণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। তবে কোন কোন অপরাধকে রাজনৈতিক বলা যাবে না সে তালিকাও বেশ দীর্ঘ। যেমন হত্যা, নরহত্যা বা অপরাধমূলক হত্যা, আক্রমণ, বিস্ফোরণের কারণ, জীবন বিপন্ন করার উদ্দেশ্যে বিস্ফোরক পদার্থ বা অস্ত্র তৈরি বা নিজের কাছে রাখা, গ্রেপ্তার এড়ানোর উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার, জীবন বিপন্ন করার অভিপ্রায় নিয়ে সম্পত্তির ক্ষতি করা, অপহরণ বা জিম্মি করা, হত্যার প্ররোচনা এবং সন্ত্রাস সম্পর্কিত অন্য কোনো অপরাধ।

© তাহলে হাসিনাকে কি ফেরত দিতেই হবে?

শেখ হাসিনা একজন রাজনীতিবিদ। তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারেন। তবে যেসব অপরাধের জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তার কয়েকটি চুক্তিতে রাজনৈতিক অপরাধের সংজ্ঞা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা, গুম ও নির্যাতনের মামলা রয়েছে।

১৩ আগস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে একজন মুদি দোকানিকে হত্যার জন্য মামলা করা হয়েছে। পরের দিন ২০১৫ সালে একজন আইনজীবীকে অপহরণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গুমের মামলা দায়ের করা হয়। ১৫ আগস্ট তার বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলা হয়। এই মামলায় হত্যা, নির্যাতন ও গণহত্যার অভিযোগে আনা হয়েছে।

© হাসিনাকে ফেরত চাইলে কী করবে ভারত?

বাংলাদেশে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করবে ভারত। বাংলাদেশে তাদের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার কথা মাথায় নিয়েই সিদ্ধান্ত নেবে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে নয়াদিল্লির দীর্ঘদিনের বন্ধু ও মিত্র শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টিও ভারত মাথায় রাখবে।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) সাবেক এক কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয়ার মধ্যেই কি আমাদের গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ নিহিত? না, বিষয়টি এমন নয়। চুক্তির বৈধতা কোনো ব্যাপার না। উভয় পক্ষের আইনজীবী রয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক মানুষ রয়েছে যারা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়। আওয়ামী লীগ শেষ হয়ে যায়নি। এর গভীর শিকড় রয়েছে। এরা আবার উঠে দাঁড়াবে। সেখানে প্রশাসন ও সামরিক বাহিনী রয়েছে যারা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে মূল্য দেয়। তাই আমাদের একটি শক্তিশালী পক্ষ রয়েছে যারা সুসম্পর্কের পক্ষে। তাছাড়া ভৌগলিক বাস্তবতা রয়েছে। বাংলাদেশ ভারতবেষ্টিত। দুই দেশের মধ্যে যথেষ্ট কাঠামোগত সংযোগ রয়েছে। এই সম্পর্কের দিকনির্দেশনা নিয়ে শেষ কথাটি এখনও লেখা হয়নি।

এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আরও বেশ কয়েকজন ভারতীয় প্রতিরক্ষা কমকর্তার সঙ্গে আলাপ করেছে। তারা বলছেন, কোনো দেশ তাদের জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে বন্দি বিনিময় করে না। এটা চুক্তি থাক বা না থাক। তবে যা কিছু হবে সেটা রাজনৈতিকভাবে হবে।

৮২ বার পড়া হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।