আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও পঁচাত্তরের ঘাতক এবং তাদের দোসররা পরাজয়ের বদলা নিতে এখনও তৎপর।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র আজও থামেনি, সুযোগ পেলেই তারা আঘাত হানবে।
শেখ হাসিনা বলেন, অপ্রিয় হলেও সত্য যে, আমাদের এই স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে খর্ব করার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র আজও থামেনি। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও ওৎ পেতে বসে আছে কীভাবে বাংলাদেশের অগ্রসরমান অভিযাত্রাকে স্তব্ধ করা যায়।
সোমবার (মার্চ ২৫) সন্ধ্যায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
টানা চারবারের সরকারপ্রধান বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও পঁচাত্তরের ঘাতক এবং তাদের দোসররা এখনও তৎপর রয়েছে পরাজয়ের বদলা নিতে। সুযোগ পেলেই তারা আঘাত হানবে। তাদের সামনে একমাত্র বাধা আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগকে ছলে-বলে-কৌশলে নিশ্চিহ্ন বা দুর্বল করতে পারলেই পরাজিত শক্তির উত্থান অনিবার্য। কাজেই কাণ্ডারী হুঁশিয়ার।
শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। যুদ্ধ করে আমরা এদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়—জাতির পিতা নির্দেশিত এই বৈদেশিক নীতি অনুসরণ করেই আমরা দেশ পরিচালনা করি। আমাদের কোনো প্রভু নেই, আছে বন্ধু। তাই কারও রক্তচক্ষু বাঙালি জাতি কোনদিন মেনে নেবে না। প্রয়োজন হলে বুকের রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-সম্মান রক্ষা করবে।
দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৫৪তম দিবসে আসুন, সকল কূটকৌশল-ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাই।
জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের ওপর আবারও আস্থা রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য, যে উন্নয়ন-অগ্রগতি আমরা এখন পর্যন্ত সাধন করেছি, তা আরও এগিয়ে নিয়ে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। যে বাংলাদেশ হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য-মুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা থেকে উদ্বৃত করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’।
প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং রেডিও স্টেশন, বিভিন্ন অনলাইন নিউজপোর্টাল একযোগে সরাসরি সম্প্রচার করে।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর পঞ্চম মেয়াদে এবং টানা চতুর্থবারের মতো দায়িত্ব গ্রহণের পর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ভাষণ।