আওয়ামী লীগ চলতি বছরের পুরো সময় ধরেই সংগঠন গোছানোর কাজে জোর দেবে ৷ এ কর্মসূচিতে তৃণমূল থেকে জেলা পর্যায়ে সম্মেলন ও কমিটি গঠনের কাজগুলো সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, রমজান শেষ হলে তৃণমূল পর্যায় থেকে সাংগঠনিক কাজ শুরু হবে।
সংগঠনকে সুশৃঙ্খল ও আরও শক্তিশালী করতে বিভিন্ন ধরনের সাংগঠনিক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।
নেতারা আরও জানান, শুধু আওয়ামী লীগের সম্মেলন নয়, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলনের বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এসব সংগঠনের যেসব জেলা, উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ে যেখানে কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে সেখানেও সম্মেলন করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ৷ আবার যেসব জায়গায় সম্মেলন হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি সেগুলোও গঠন করা হবে। আর যেসব সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে সেগুলোর কেন্দ্রীয় সম্মেলনও করতে বলা হবে। চলতি বছর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও এসব কাজ সম্পন্ন করবে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ইতোমধ্যেই সাংগঠনিক কাজ শুরু হয়ে গেছে। রোজার পর আরও জোরদার করা হবে। যেসব জেলা, উপজেলা, মহানগর, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে সেগুলোর সম্মেলন অচিরেই করা হবে। যেখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া সম্ভব হয়নি, সেগুলোও সম্পন্ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু আওয়ামী লীগ নয়, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও এসব কাজ করবে। এ সব সংগঠনকেও কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত যেসব জায়গায় কমিটির মেয়াদ নেই সেসব জায়গায় সম্মেলন হবে।
এসব সাংগঠনিক কাজের মধ্যে প্রাধান্য পাবে সম্মেলন ও কমিটি গঠন। জেলা, উপজেলা, থানা, মহানগর, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড সব পর্যায়েই সম্মেলন করা হবে। এ সব পর্যায়ের যেগুলোর কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে দ্রুতই সেগুলোর সম্মেলন করা হবে। পাশাপাশি কিছু কিছু জায়গায় সম্মেলনের পর যেসব জায়গায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি সেখানে নতুন কমিটি দেওয়া হবে। এছাড়া দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে বর্ধিত সভা, কর্মীসভার মতো কর্মসূচিও দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি নতুন সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য পদ নবায়নের কাজও চলবে। এ সব কাজের মধ্য দিয়ে সংগঠনকে সুশৃঙ্খল, আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করা হবে।
আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তখন কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে সব জেলা, উপজেলার সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া এই সময়ের মধ্যে আরও কিছু জেলা উপজেলার কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধেক সংখ্যক জেলা, উপজেলাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে।
আবার কোনো কোনো জেলা বা উপজেলার সম্মেলনের দীর্ঘ দিন পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়। এছাড়া দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কোনো কোনোটির কমিটির নির্ধারিত মেয়াদ পার হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে গত এক বছর এই সব সাংগঠনিক কাজ তেমন একটা চালাতে পারেনি দলটি। নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিরোধী দলের আন্দোলনসহ রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এই কাজগুলো স্থগিত রাখতে হয়। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি না থাকায় সাংগঠনিক এই কাজগুলো সম্পন্ন করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও দলটির নেতারা জানান।
সম্প্রতি মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন ওবায়দুল কাদের। পর্যায়ক্রমে অন্য সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসবেন।
রমজান শেষ হলে তৃণমূল পর্যায়ের সাংগঠনিক কর্মসূচিগুলো নেওয়া হবে৷ এ কারণে রোজার মধ্যেই এসব সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের নেতারা।
জানা গেছে, সাংগঠনিক কাজের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের দলের বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মতবিনিময় করছেন। তিনি সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং কাজের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন।