
এখন থেকে সন্তান জন্ম দিলেই নগদ অর্থ পাবেন চীনা দম্পতিরা।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইট টাইমস।
সন্তানের মুখে মা কিংবা বাবা ডাক শুনতে কে না চায়! অথচ এই সুযোগটাই পায়ে ঠেলে দিয়েছিল চীনের মানুষ। ‘এক সন্তান নীতি’ অবলম্বন করে ভুগছে নিম্ন জন্মহার সমস্যায়। এই সমস্যা থেকে উত্তরণে নজিরবিহীন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে চীনের জনসংখ্যা ১৪১ কোটি। একসময় বিশ্বের শীর্ষ জনবহুল দেশ হলেও বর্তমানে মোট জনসংখ্যার হিসেবে প্রথম স্থানে আছে ভারত ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীন।
চীনের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে যত সংখ্যক চীনা দম্পতি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন— প্রত্যেক দম্পতিকে সন্তান লালন-পালন বাবদ বছরে একবার নগদ ৩ হাজার ৬০০ ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭৮ হাজার ৪৮৪ টাকা) সরকারের পক্ষ থেকে প্রদান করা হবে। সন্তানের বয়স তিন বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত এই টাকা দেওয়া হবে।
এর আগে, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য গত শতকের আশির দশকে এক সন্তান নীতি গ্রহণ করেছিল চীন। কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে জন্মহার হ্রাস পেতে থাকায় লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতা, বয়স্ক লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি, কর্মক্ষম নারী-পুরুষের সংখ্যা হ্রাসের মতো সংকটগুলো প্রকট হয়ে উঠতে থাকে এবং ফলশ্রুতিতে ২০১৬ সালে এক সন্তাননীতি বাতিল করে ২ সন্তাননীতি চালু করে বেইজিং।
পরে ২০২১ সালে দুই সন্তাননীতি বাতিল করে ৩ সন্তাননীতি চালু করা হয়, কিন্তু তাতে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। উপরন্তু ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪— টানা ৩ বছর নিম্ন জন্মহারের রেকর্ড করেছে চীন।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনের মতে, এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে চীনের জনসংখ্যা নেমে আসবে ১৩০ কোটিতে। আর ২১০০ সালের মধ্যে তা আরও কমে হবে ৮০ কোটি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের তকমা হারায় চীন। তাদের টপকে জনবহুলের তালিকায় শীর্ষে পৌঁছে যায় ভারত।