raising sylhet
ঢাকাবুধবার , ২১ আগস্ট ২০২৪
  1. অর্থনীতি
  2. আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আরো
  5. খেলার খবর
  6. গণমাধ্যম
  7. চাকরির খবর
  8. জাতীয়
  9. দেশের খবর
  10. ধর্ম পাতা
  11. পরিবেশ
  12. প্রবাস
  13. প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  14. বিজ্ঞান প্রযুক্তি
  15. বিনোদন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য লম্পট ইমাম উদ্দিনের কুকীর্ত্তি

rising sylhet
rising sylhet
আগস্ট ২১, ২০২৪ ১০:০৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিবেদন: ইমাম উদ্দিন, পিতার নাম ইসলাম উদ্দিন, তিনি সৌদি আরব প্রবাসী। বাড়ি সিলেট জেলার কানাইঘাট থানার ৯নং রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডেও কোনাগ্রামে। আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর কয়েক বছর আগে হঠাৎ করে নামের পিছনে জোড়ে দেয় চৌধুরী বিশেষন। বিয়ানীবাজারের টিকড়পাড়াস্থ ঢাকা উত্তর মোহাম্মদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছে মাত্র অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত। এক সময় জকিগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা লোকমান আহমদ চৌধুরীর হয়ে কাজ করতো। সদ্য বিদায়ী সরকার ক্ষমতায় আসার সাথে-সাথে বদলে যায় তার ভাগ্যরেখা। লোকমান উদ্দিনের বদৌলতে সিলেট-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদারের কাছে মানুষ হয়ে উঠে ইমাম। কানাইঘাট উপজেলায় এমপির প্রতিনিধি হয়ে উঠে ইমাম উদ্দিন। ফলে ধিরে ধিরে এলাকায় তার প্রভাব বিস্তার লাভ করতে থাকে। জাল সার্টিফিকেট দিয়ে সিলেট দরবস্থ পল্লি বিদ্যুত সমিতি-২ এর পরিচালক পদ পেয়ে যায় মাত্র অষ্টম শ্রেণী পাস ইমাম উদ্দিন। এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিদ্যুত পাইয়ে দেওয়ার নামে শুরু করে চাঁদাবাজী। তার এসব কর্মকান্ডে অতিষ্ট্য হয়ে উঠে কানাইঘাট উপজেলার লোকজন। সে সময় তার পরিচালক হওয়া নিয়ে বির্তক সৃষ্টি হলে তদন্ত করে দেখা যায়, মাত্র অষ্টম শ্রেনী পাস ইমাম উদ্দিন এসএসসি পাসে জাল সার্টিফিকেট দিয়ে হাফিজ আহমদ মজুমদারকে দিয়ে পরিচালকের পদটি ভাগিয়ে নিয়েছে। তদন্তে তার জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়লে তাকে পল্লি বিদ্যুত সমিতি থেকে বহিস্কার করা হয়। কিন্তু এমপির লোক হয়ায় তার বিরুদ্ধে আর কোন প্রদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তবে বিষয়টি বিভিন্ন স্থানীয় জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে। ধীরে ধীরে এক সময় হাফিজ মজুমদারের নাম ভাঙ্গিয়ে ভাগিয়ে নেয় সিলেট এলজিডি, সিলেট সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্টানের ঠিকাদারী লাইসেন্স। বদলাতে থাকে তার ভাগ্যর চাকা।

সরকারদলীয় প্রভাব খাটিয়ে আর এমপির বিভিন্ন প্রকল্পের দুর্নীতির টাকা দিয়ে হয়ে যায় সিলেট জেলা পরিষদ সদস্য। হাফিজ মজুমদারের প্রতিনিধি হিসাবে কানাইঘাট উপজেলায় সব কয়টি দপ্তরে বাড়তে থাকে তার আধিপত্ব্য। সে মাত্র অষ্টম শ্রেনী পাস হলে এমপির প্রভাবে তার নিজ এলাকা বিরদল অগ্রগামী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদটি দখল করে নেয়। বহু বির্তর্কের পর সেই পদে আজও বহাল ইমাম উদ্দিন। শুধু হাইস্কুলের পদ নিয়ে সে থেমে যায় নি। তার নজর পড়ে পাশ্ববর্তী ঝিঙ্গাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গর্ভনিং বডির সভাপতির চেয়ারের উপর। মাত্র অষ্টম শ্রেণী পাস ইমাম উদ্দিন এমপির ক্ষমতায় হয়ে যায়, সেই কলেজের গর্ভনিং বডির সভাপতি। পদটি পেয়ে কলেজের শিক্ষকদের সাথে খারাপ ও অসৌজন্যমূলক আচর করতে থাকে সে। এক সময় ফুঁসে উঠে স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ এলাকার লোকজন। ইমাম উদ্দিনকে সেই পদ থেকে সরানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিয়ে রেজুলেশন জারি করা হলে, সেই রেজুলেশনের বিরুদ্ধে তার অনুগত স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ফখর উদ্দিন উরফে চুর ফখর উরফে মদুড়ি ফখরকে দিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করে বসে। যার জন্য আটকে যায় কলেজের নতুন গর্ভনিং বর্ডির নির্বাচন। এখনো বহাল থেকে যায় তার সভাপতির চেয়ারটির। তার বিভিন্ন দূর্নীতি নিয়ে চলছে অনুসন্ধান যা ধারাবাহিক প্রকাশিত হবে।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকাকালে তার নানা কুকীর্ত্তি, অপকর্ম, অসামাজিক কাজ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্থানীয়রা ছিলেন অসহায়। ফলে তার সকল অপকর্মগুলো চলতো দাপটের সাথে। কেউ কিছু বললে ভীতি প্রদর্শন করতো। লম্পট ও দুর্নীতিবাজ ইমাম উদ্দিন জেলা পরিষদ সদস্য থাকা কালে বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে সরকারে কোটি কোটি টাকা।

স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে জোর করে স্কুল-কলেজের ম্যানেজিং কমিটিতে থাকা, কমিটিতে থেকে উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফান্ড আত্মসাতে জড়িত ছিলো এই ইমাম উদ্দিন। দূর্নিতী,অপকর্ম চেয়ার দখল ছাড়াও সে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করে বেড়াতো। নিজ ঘরে স্ত্রী রেখে পরনারীদের সাথে অপকর্মে লিপ্ত হওয়া তার একাধিক সংসার ভেঙ্গে যায়। সম্প্রতি তার নিজ এলাকার এক প্রবাসী স্ত্রীর সাথে সিলেট শহরে অপকর্ম করতে গিয়ে একাধিক বার জুতা পেঠাসহ গণধোলাইর শিকার হয় সে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঐ নারী নাম মিনা বেগম, পিতার বাড়ি ইমামের পার্শ্ববর্তী মাঝকুপা গ্রামে হলে বিয়ে হয় ৯নং রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের বিরদল আগকুফা গ্রামে। প্রবাসীর স্ত্রী হওয়া মিনা বেগম (৩৫) ইমাম উদ্দিনের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দীর্ঘ কয়েক বছর আগে থেকে। মিনার স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী। তিনি প্রবাসে থাকলেও মিনা সিলেট শহরে বাসায় ভাড়া দিয়ে বসবাস করেন। মিনা বেগম নামের ঐ নারীর বাসায় ইমাম উদ্দিনের কয়েক বছর থেকে ছিলো অবাধ যাতায়াত। মিনার বাসায় ইমাম প্রায় সময় রাত্রী যাপন করতেন। বিষয়টি ওই ভবনের অন্যান্য বাসিন্দারা টের পেয়ে ইমামকে ঐ বাসায় আসতে নিষেধ প্রদান করেন। কিন্তু সরকার দলীয় লোক পরিচয়ে ইমাম উদ্দিন তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন সহ পুলিশ দিয়ে হয়রানীর হুমকি-ধামকি দেয়।

সর্বশেষ গত ৪ আগস্ট গভীর রাতে মিনার বাসায় আসে ইমাম এবং সেখানে রাত্রি যাপন করে। পরদিন ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হলেও ইমাম ছিলো মিনাকে নিয়ে রঙ্গলিলায় ব্যস্থ। সরকার পতনের পরপর ঐ বাসা সহ স্থানীয় প্রতিবেশী কিছু লোক মিনার বাসায় প্রবেশ করে ইমাম উদ্দিন ও মিনাকে অনৈতিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় আটক করে উত্তম-অধম দিয়ে ছেড়ে দেয়। কিন্তু চুরে না শুনে ধর্মের বাণী, গত ১৩ আগস্ট ইমাম আবারো মিনা বেগমের বাসায় যায়। সে সময় আমুদ ফুর্তি করার সময় তাকে হাতেনাতে ধরে জুতাপেটা করতে থাকেন ঐ বাসার লোকজন।

বিল্ডিংয়ের কেয়ারটেকার আলী হোসাইন বলেন, তাকে জুতা পেটা করেন আমার স্ত্রী নিজেও। সে সময় ইমাম আমার হাতে পায়ে ধরে মাফ চাইতে থাকে। পওে তার নিজ উপজেলা কানাইঘাটের দু’একজনের অনুরোধে তাকে জুতাপেটা করার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক বছর আগে মিনা বেগম নামের ওই নারীর গ্রামের বাড়িতেও নাকি ইমাম উদ্দিনকে হাতেনাতে ধরে জুতাপেটা করা হয়েছিলো। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ওই ভবনের কেয়ারটেকার আলী হোসাইনের সাথে, তিনি বলেন, ইমাম উদ্দিন কয়েক বছর থেকে নিয়মিত ওই বাসায় আসতো। ওই নারীর স্বামী দেশে আসলে ইমাম উদ্দিন আসতো না। গত ৫ আগস্ট ও ১৩ আগস্ট হাতেনাতে ধরে চড়-থাপ্পড় দেওয়া ও জুতাপেটা করার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দেন।

আলী হোসাইন বলেন, ইমাম উদ্দিন যেই রকম লম্পট ও চরিত্রহীন, ওই নারী ও এমনি ভয়ংকর এক চরিত্রহীন নারী। আরো অনেকে আসতো এই নারীর কাছে। যারা আসতো তারা আওয়ামী লীগের লোক। অতীতে আমরা বাঁধা দেওয়ায় হুমকির সম্মুখীন হয়েছি। সরকার দলীয় লোক হওয়ায় আমরা ভয়ে নিরব থাকি। ১৩ তারিখ ইমাম উদ্দিনকে জুতাপেটা করার পর ওই নারীকে বলে দেই, ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাসা ছেড়ে দিতে। এই লম্পট নারী আগামী ১ তারিখ থেকে আমাদের এখানে আর থাকবে না। তবে এ ঘটনার পর থেকে ইমাম উদ্দিন গা ডাকা দিয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন। সরকার বদলের ছাত্র আন্দোলনে এই ইমাম উদ্দিন বিভিন্ন রকম বিরোধী ভুমিকা রাখলে সে রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে।

১৭৭ বার পড়া হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।