আজ ১১ মে, বিশ্ব মা দিবস। মায়ের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ছোট্ট প্রয়াস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় দিনটি। মা শুধুমাত্র একজন সত্তা নন, তিনি হলেন জীবনের নিরাপদ আশ্রয়, আত্মত্যাগের প্রতীক এবং নিঃস্বার্থ ভালোবাসার উৎস।মায়ের ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে এই বিশেষ দিনটিতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও জানিয়েছেন তাদের অনুভূতি ও ভাবনা। তুলে ধরছেন রাইজিংসিলেটে’র সিকৃবি প্রতিনিধি আইনুল হক।
আমাদের প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসেই আমাদের “মা” থাকেন
একজন সন্তানের কাছে প্রতিটি দিন “মা” দিবস হওয়া উচিত। আমাদের প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসেই আমাদের “মা” থাকেন। মায়ের সীমাহীন আদরের জাহাজের মধ্যমণি তো আমরাই। মা নামক মমতাকে হারিয়েছি প্রায় এক বছর আগে। মায়ের সাথে কাটানো শ্রেষ্ঠ সময়গুলোর কথা মনে পড়লে নিজের অজান্তেই চোখে পানি চলে আসে। ছুটিতে যখন বাড়িতে যেয়ে মাকে দেখতে পাইনা তখন নিজেকে দুনিয়ার সবথেকে অভাগা বলেই মনে হয়। জানি এই অভাব কখনো পূরণ হবার নয়। পৃথিবীর সকল “মা” এর উপর আল্লাহ তায়া’লার অসীম রহমত বর্ষিত হোক। আর যাদের মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন আল্লাহ তায়া’লা সেসব মাকে বেহেশতের সর্বোচ্চ মাকামে পৌঁছায় দিক আমিন।
ফাওহাদ রহমান জিয়া
কৃষি অনুষদ
সেশন : ২০২১-২২
মায়ের ভালোবাসা নিঃস্বার্থ ও আত্মত্যাগে ভরা
মায়ের ভালোবাসা নিঃস্বার্থ, অপরিসীম, নিরন্তর ও আত্মত্যাগে ভরা। আমাদের জীবনের প্রথম শিক্ষক, হৃদয়ের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল, আর সারাজীবনের প্রেরণার উৎস। একজন নারী মেয়ে হিসেবে হয়ত খারাপ হতে পারে, কিন্তু একজন মা হিসেবে তিনি কখনও খারাপ হন না। জন্ম থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি ধাপে মায়ের স্নেহ ও ত্যাগ আমাদের পথ দেখায়। আজকের এই বিশেষ দিনে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সেই নারীর কথা, যাঁর হাত ধরে আমরা শিখেছি হাঁটতে, কথা বলতে, মানুষ হতে। এই দিনটি যেন হয় মায়ের প্রতি ভালোবাসা, সম্মান,যত্ন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক অনন্য উপলক্ষ। আমাদের উচিৎ মায়ের প্রতি আরও যত্নবান হওয়া, মায়ের মর্যাদা রক্ষায় সবসময় সচেষ্ট থাকা, তাঁর প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান জানাতে কখনো কার্পণ্য না করা। মা শুধু একজন মানুষ নন — তিনি একজন মহানুভব, একজন আশীর্বাদ। মা দিবসে পৃথিবীর প্রতিটি মা’কে জানাই গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।
মো: আব্দুল্লাহ
মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ
সেশন- ২০২০-২১
তুমি আমার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা।
মা তুমি আমার প্রথম স্পর্শ, প্রথম উচ্চারিত শব্দ এবং প্রথম ভালোবাসা। আমার জীবনে মা শুধু একজন নারী নন, তিনি একটি আশ্রয় যার ছায়ায় আমি সবসময় নির্ভয়ে বেড়ে উঠেছি। আমার জীবনের যা কিছু অজর্ন সব কিছু জুড়ে আছো মা তুমি। তুমি ছাড়া আমার জীবন অস্তিত্বহীন। ছোটবেলার সেই প্রথম আধো আধো বুলি থেকে শুরু করে জীবনের কঠিন পথে সাহস জুগিয়ে পাশে থাকা সবটা জুড়েই তো তুমি মা। আমার হাসিতে তোমার হাসি দেখেছি, আমার কষ্টে তোমার চোখ ভিজেছে। কখনো বুঝতে দাওনি কোনো অভাব, নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে আমার স্বপ্নগুলোকে বাঁচিয়ে রেখেছ। তোমার দেখানো পথ ধরেই আমি আজকের আমি হয়েছি। আজ নাকি মা দিবস? তোমাকে ভালোবাসতে তো কোন দিন লাগে না মা? তোমার জন্য প্রতিদিনই আমার কাছে মা দিবস।
আজ এই বিশেষ দিনে তোমাকে শুধু একটা কথা বলতে চাই ,তুমিই আমার বৃষ্টির দিনের ছাতা, কাঠফাটা রোদের ছায়া তুমিই আমার তৃষ্ণার জল, তুমিই আমার স্নেহের সকাল। তুমি আমার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা।
আল-মামুন হোসাইন
ভেটেরিনারি অনুষদ, সিকৃবি
সেশন-২০১৯-২০
মায়েদের ভালোবাসা ও ত্যাগের স্বীকৃতির জন্য কোনো বিশেষ দিবসের প্রয়োজন নেই।
মায়েদের ভালোবাসা ও ত্যাগের স্বীকৃতির জন্য কোন বিশেষ দিবসের প্রয়োজন নেই। যেকোনো সন্তানের ছোট থেকে বেড়ে ওঠা, তার সফলতার পেছনে মায়ের অবদান যেকেউ স্বীকার করবে। তাদের নিঃস্বার্থ মমতা ও স্নেহ প্রত্যেক সন্তানের জীবনের মূল চালিকা শক্তি। কেউ গৃহিণী, কেউবা কর্মজীবী—সব মা-ই একেকজন যোদ্ধা। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত তাঁরা পরিবার ও সন্তানদের দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাদের যেন কোন ক্লান্তি নেই, কোন ছুটি নেই। নিজের চাওয়া পাওয়ার কথা ভুলে সন্তানদের জন্য সবকিছু উৎসর্গ করতে একবারও ভাবেন না। তবুও তাঁরা হাসেন, আগলে রাখেন, স্বপ্ন দেখান। মায়েরা সত্যিকারের “সুপার উইমেন”—যাঁদের ভালোবাসা নিঃশর্ত, অপরিমেয়। এই মা দিবসে প্রতিটি মায়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই।
সাফকাত তাসিন
জীবপ্রযুক্তি ও প্রকৌশল অনুষদ, সিকৃবি
সেশন: ২০২২-২০২৩
আর কয়েকটা দিন থেকে গেলে হয়না!
এইতো ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময়টা চলে আসছে। শেষবারের মতো এলাকাটা, ঘরটা একটু দেখে নেই। আসলে শেষবার না, আবার জানি কবে আসা হয় কে জানে! সবার সাথে বিদায় নেওয়া হয়েছে, সবাইকেই কমবেশি মনে পড়বে। কিন্তু একজনকে অনেক বেশি মনে পড়বে। সবার মধ্যে একটা মিল আছে, “সাবধানে যাস” কিন্তু একজন বলবে ” আর কয়েকটা দিন থেকে গেলে হয়না!”। এই কয়েকটা দিন যে কখনো শেষ হয় না। মা, উনিই এই কথাটা বলেন। পারলে তো আমার সাথে ক্যাম্পাস পর্যন্তই চলে আসবেন। যখন ট্রেন ধরার জন্য বের হই, পিছন ফিরে তাকানোর সাহসটা আসেনা। হয়তো পিছনে ফিরে মা’কে দেখলে আর সম্ভবত ক্যাম্পাসে ফেরা হবেনা।
মো: জুহায়ের আহনাফ জিহান
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ
২য় বর্ষ
মা দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই মানুষটির কথা যিনি নিঃস্বার্থভাবে সন্তানকে গড়ে তোলেন। শিক্ষার্থীদের এই অনুভূতি বলে দেয় মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা যুগে যুগে থেকেছে, থাকবে—আর নতুন প্রজন্মও সেই চেতনা ধারণ করছে অন্তর থেকে।