
রাইজিংসিলেট- সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর উত্তোলনে দুর্নীতি: দুদকের অনুসন্ধানে ৫৩ জনের সংশ্লিষ্টতা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সীমান্তবর্তী এলাকায় সাদা পাথর উত্তোলনকে ঘিরে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারি কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অন্তত ৫৩ জন এই অনিয়মে জড়িত।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, “ভোলাগঞ্জ এলাকায় সাদা পাথর উত্তোলনে দুর্নীতির সত্যতা মিলেছে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এর আগে, ১৩ আগস্ট দুদকের সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাফি মো. নাজমুস সা’দাতের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম সরেজমিনে ভোলাগঞ্জ এলাকা পরিদর্শন করে। তদন্তে দেখা যায়, সীমান্তবর্তী সংরক্ষিত এলাকায় অনুমোদন ছাড়া পাথর উত্তোলন চলছে, যা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও ঘটেছে। এতে কয়েকশ কোটি টাকার পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
১৬ আগস্ট কমিশনে জমা দেওয়া প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫৩ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৪২ জন রাজনৈতিক দলের নেতা ও ব্যবসায়ী, যার মধ্যে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতার নামও রয়েছে।
এছাড়াও, প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও, ট্যাগ অফিসার, ওসি এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-র সদস্যদের সংশ্লিষ্টতার কথাও তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পর সিলেট জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেমন বিএনপি, জামায়াত এবং এনসিপি প্রতিবেদনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে এর বিরোধিতা করেছে। জামায়াত প্রতিবাদ মিছিল করে, আর এনসিপি স্মারকলিপি প্রদান করে তাদের অবস্থান তুলে ধরে।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, প্রতিবেদনটি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করছে। সত্যতা প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, অন্যদিকে যদি অভিযোগ ভিত্তিহীন হয়, তবে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও তদন্তের আওতায় আসবেন।