সিলেটে চাহিদার অর্ধেকের চাইতেও কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে রাত-দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব মিলিয়ে ৮-১০ ঘণ্টাও বিদ্যৎ পাচ্ছেন না মহানগরবাসী। এতে দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত পাশাপাশি নিদারুন কষ্টে আছেন তারা। বিঘ্ন ঘটছে অফিস-আদালতের কার্যক্রমেও। সিলেট শহরতলি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পিডিবি (বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড)। সিলেটের গ্রামাঞ্চলসহ কিছু শহরতলি এলাকায় সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুৎ। কিন্তু বিদ্যুৎ বন্টনের ক্ষেত্রে সিলেট মহানগর ও শহরতলির প্রতি ‘বৈষম্যমূলক’ আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার (১৫ এপ্রিল) সিলেটে পিডিবির সবগুলো ডিভিশনের চাহিদার মধ্য থেকে ৪২ ভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। ঘাটতি ছিলো ৫৮ ভাগ। যে কারণে শনিবার সকাল থেকেই সিলেট মহানগরের সব এলাকায় ছিলো চরম বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
একদিকে রমজান, অন্যদিকে গরমের উত্তাপ। এমন পরিস্থিতিতে গত কয়েকদিন ধরেই সিলেটে বিদ্যুৎ থাকছে না ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ইফতারের সময় যেমন বিদ্যুৎ চলে যায় তেমনি রাতে সেহেরির সময়ও হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। দিন রাত মিলিয়ে ৮-১০ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না সিলেটবাসী। এতে চরম ভোগান্তিতে আছেন সিলেটের মানুষ।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেট-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ-ই-আরেফিন রবিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে জানান- আজ এই সময়ে তাঁর ডিভিশনে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দরকার। কিন্তু সরবরাহ করা হয়েছে ১৭ মেগা.। ঘাটতি ১৩ মেগা.। ফলে বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেট-২ এর অওতাভুক্ত এলাকায় অনির্ধারিত লোডশেডিং হচ্ছেই। আর সরবরাহ কম থাকায় গ্রাহকদের পক্ষ থেকে তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
তিনি জানান- সিলেট মহানগর ও শহরতলি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পিডিবি। আর সিলেটের গ্রামাঞ্চলসহ কিছু শহরতলি এলাকায় সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুৎ। কিন্তু বিদ্যুৎ বন্টনের ক্ষেত্রে পল্লী বিদ্যুতের চাইতে পিডিবিকে কম দেওয়া হচ্ছে। পিডিবির চাহিদার অর্ধেকের চাইতেও কম বিদ্যুৎ পাচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে কুমারগাঁও গ্রিডের ইনচার্জ কাজি মুতাসসিম বিল্লাহ বলেন- অভিযোগটি আসলে সঠিক নয়। আমরা ন্যাশনাল গ্রিড থেকেই কম পাচ্ছি। সে অনুযায়ী ডিস্ট্রিবিউট করছি।
এদিকে, সংশ্লিষ্টরা বলছেন- হঠাৎ করে অতিরিক্ত গরমের কারণে জেনারেশন ফল্ট এবং ঈদের কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়াও বিদ্যুৎহীনতার কারণ। গরমের কারণে বাসা বাড়ি, মার্কেট, অফিস পাড়ায় এসির ব্যবহার বেড়ে গেছে। আসন্ন ঈদের কারণে মার্কেট শপিংমলগুলোতে দীর্ঘ সময় খোলা থাকছে। পাশাপাশি এখনো অফিস আদালত, কলকারখানা বন্ধ হয়নি তাই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট অবস্থা আরও তিন-চার দিন থাকবে। এর পরে অফিস আদালত কল কারখানাতে ঈদের বন্ধ হয়ে যাবে। তখন লোডশেডিং সমস্যা এরকম থাকবে না