সিলেটে মাংস সংগ্রহশালা থেকে দুর্গন্ধযুক্ত খাসির মাংস সরবরাহ করে তোপের মুখে পড়েছে সুলতান’স ডাইন রেষ্টুরেন্ট। সংগ্রহশালা থেকে মাংসের এমন দুর্গন্ধে অতিষ্ট এলাকাবাসী। বেশ কিছুদিন ধরে সিলেট নগরীর দাঁড়িয়া পাড়া এলাকায় মাংস সংগ্রহশালা থেকে এমন দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর দাঁড়িয়াপাড়া এলাকার মেঘনা-বি-৩৩ ইমন হাউজিংয়ে ভাড়াটিয়া ঘরের পাশে মাংস সংগ্রহশালা থেকে এমন দুর্গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে জড়ো হয়ে অভিযান চালায় স্থানীয় কিছু যুবক। এসময় ঘরের পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দুর্গন্ধযুক্ত মাংস কেটে সেগুলো পরিষ্কার করতে দেখেন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরীর দাঁড়িয়াপাড়া এলাকার ইমন হাউজিং এলাকার একটি ভাড়াটিয়া বাসা থেকে গত কয়েকদিন থেকে দুর্গন্ধে বেশ অতিষ্ট ছিলেন আশেপাশের বাসিন্দারা। আজ বিকালের পরে কয়েকজন স্থানীয় কিছু যুবক সুলতান ডাইনের মাংসের সংগ্রহশালায় অভিযান চালান।
এসময় তারা পঁচা মাংসের অভিযোগ তুললে তাদের তোপের মুখে সেখানকার দায়িত্বরতরা বলেন, এখানে থাকা মাংসে কিছু গন্ধ হবে। কারণ মাংসগুলো সিলেটে জবাই করা মাংস না। এগুলা ঢাকা থেকে জবাই করে আনা মাংস। সেখানে জবাই করার পর সিলেটে আনা হয়।
এসময় যুবকরা স্থানীয় মুরব্বীদের শরণাপন্ন হলে তারা সুলতান’স ডাইনের কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা এসে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাসায় বসে বিষয়টি মিটমাটের চেষ্টা করেন।
মাংস সরবরাহকারী মা-বাবার দোয়া প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মোহাম্মদ সুমন বলেন, আমাদের দোকান আছে ঢাকার কাপ্তান বাজারে। খাসিগুলো সেখানে জবাই করা হয়। পরে সেখান থেকে মাংসগুলো বস্তায় ভরে বাসে করে সিলেটের কদমতলীতে আনা হয়। সেখান থেকে আমরা কয়েকজন গিয়ে সেগুলো এখানে নিয়ে আসি। পরে মাংসের সাইজ করে সুলতান ডাইনে সাপ্লাই দেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিদিন ২০০-২৫০ কেজি খাসির মাংস ঢাকা থেকে নিয়ে আসি এবং সকালে এনে সেগুলো বিকেলে সাপ্লাই দেই। তবে সেগুলোতে এতো দুর্গন্ধ থাকার কারণ সঠিকভাবে বলতে পারেননি তিনি।
সংগ্রহশালার পাশে থাকা একটি বাসার ভাড়াটিয়া রনজিত সরকার নামে একজন বলেন, আমার পাশের ঘর থেকে সিলেট সুলতান ডাইনে মাংস দেয়া হয়। প্রথমে তারা আমার পার্শ্ববর্তী ঘরে মাংস কাটা হতো। আমরা বাসার মালিকের কাছে অভিযোগ দেওয়াতে এখন আর ঘরে না করে বাসার পাশের বাউন্ডারি সংলগ্ন জায়গায় মাংস ধুয়ে ও কাটাকাটির কাজ করে। এখানে প্রচুর দুর্গন্ধ হয় যার কারণে আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবক বলেন, এক মাস ধরে এই সমস্যায় আমরা ভুগছি। মাংস ভালো না তাই এতো দুর্গন্ধ বের হয়। যদি মাংস ভালো হতো তাহলে নিশ্চয় সেগুলো থেকে দুর্গন্ধ বের হতো না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট সুলতান’স ডাইনের ম্যানেজার অপারেশনস জুলকার আহমদ উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা কি কোন প্রমাণ পেয়েছেন যে এই মাংস আমরা ওদের কাছ থেকে সংগ্রহ করি? পরে সেখানে থাকা সাংবাদিকরা জানান, তাদের কাছে প্রমাণ আছে। পরে তিনি মাংস সংগ্রহের কথা স্বীকার করেন।
এসময় তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিনকার মাংস প্রতিদিনই কাজে লাগাই, কোন ফ্রোজেন মাংস আমরা ব্যবহার করি না। পরে উপস্থিত সাংবাদিকরা ঢাকার কাপ্তানবাজারে জবাই করা মাংস কিভাবে সিলেটে এনে ব্যবহার করেন, এই প্রশ্ন করলে, তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শ্যামল পুরকায়স্থ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নে। ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করাই আমাদের কাজ।
https://www.facebook.com/share/v/9ejscTv5xEzVzjn5/?mibextid=oFDknk