রাইজিংসিলেট- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে কারা ভোটের মাঠে নামবেন, তা রোববার বিকালে জানা যাবে। রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে নৌকার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তফসিল ঘোষণার পর এবার চার দিনে আওয়ামী লীগের মনোয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৩৬২টি। আগ্রহীদের মধ্যে কারা ৩০০ আসনে নৌকার প্রার্থী হবেন, তা চূড়ান্ত করেছে দলটির মনোনয়ন বোর্ড।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সিলেট বিভাগে রয়েছে ১৯টি সংসদীয় আসন। এই ১৯টি আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ১৬৩ জন প্রার্থী। এসব প্রার্থীদের মধ্যে কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা।
দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এবার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এমন নেতাকে প্রাধান্য দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে নৌকা প্রতীকে নতুন নতুন মুখের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন মনোনীত প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগমুহূর্তে নির্বাচনী আলোচনায় তৃণমূল পর্যায়েও চলছে নানা চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ। সিলেট বিভাগের ৪ জেলার ১৯টি আসনে প্রার্থিতা নিশ্চিত হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা সম্ভাব্যদের নাম জানতে তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধিরা। জোট-ভোটের নানা সমীকরণ আর বিদ্রোহীতার বাইরে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতায় এবার চমক থাকতে পারে বিভিন্ন আসনে।
সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন ৫২ জন নেতা। এর মধ্যে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে সবচেয়ে বেশি ১৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। চারটি মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন সিলেট-১ আসনের প্রার্থীরা। সিলেটের ছয় আসনের মধ্যে পাঁচটির সংসদ সদস্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। এর মধ্যে সিলেট-৫ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার এবার নির্বাচন করছেন না। বাকি চারটিতে বর্তমান সংসদ সদস্যরা ফরম জমা দিয়েছেন।
সিলেট ১
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিলেট সদর ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকা নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসনে এবারও দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন ৪ জন। দলের একাধিক সূত্র ও নেতাকর্মীরা বলছেন, বতর্মান সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের বিকল্প এই আসনে আর কেউ নেই। ড. এ কে আব্দুল মোমেনই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত।
সিলেট-২ (ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ উপজেলা) সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন দলের সাত নেতা। যদি এ বছর এই আসন ছেড়ে দেওয়া না হয় তবে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী অথবা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলু এই দুইজন থেকে একজন চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে পারেন।
সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) সংসদীয় আসনে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১০ জন। বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান যদি মনোনয়ন দৌড়ে পিছিয়ে পড়েন তবে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলালই হবেন এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী।
সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর) সংসদীয় আসনে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ৯ নেতা।দলের একাধিক নেতাকর্মী ও এই সংসদীয় আসনের ভোটাররা মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ও দলের হেভিওয়েট প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের আহমদই বরাবরের মতো পাবেন দলীয় মনোনয়ন।
সিলেট-৫ (কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ) সংসদীয় আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি আর নির্বাচন করবেন না। সে অনুযায়ী তিনি এবার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি। এই আসনে ৭ জন মনোনয়নপত্র কিনলেও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ অথবা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. আহমদ আল কবীর পেতে পারেন দলীয় মনোনয়ন।
সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার) সংসদীয় আসন সবচেয়ে বেশি ১৫ জন নেতা আছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে। বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ছাড়াও এখানে দলের মনোয়ন চান কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সরওয়ার হোসেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুর কাদির চৌধুরী শাফিসহ আরও ১২ জন। দলীয় হাইকমান্ড ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় এই তিনজন থেকে যেকোন একজন নমিনেশন পাবেন বলে মনে করেন এই আসনের নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।