রাইজিংসিলেট- সিলেটে বিদ্যুৎ সংকট চরমে: কুমারগাঁও পাওয়ার স্টেশন বন্ধ, জনভোগান্তি তুঙ্গে। গত এক সপ্তাহ ধরে সিলেটে প্রচণ্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। তাপমাত্রা প্রতিদিন ৩৪ থেকে ৩৭ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। এই গরমে যখন স্বস্তির আশায় মানুষ বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করছে, তখনই বিদ্যুৎ বিভ্রাট শহরজুড়ে চরম আকার ধারণ করেছে। নির্ধারিত কোনো লোডশেডিংয়ের সময়সূচি না থাকায় দিন-রাত যেকোনো সময়েই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। অনেক এলাকায় দিনে গড়ে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না, ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেটের প্রধান বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের আওতাধীন ২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার পাওয়ার স্টেশনটি প্রায় ১০ দিন ধরে অচল। বর্তমানে শুধুমাত্র জাতীয় গ্রিড থেকেই সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে সরবরাহ হচ্ছে চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এর ফলে লোডশেডিং বেড়েছে এবং ভোল্টেজ সমস্যাও প্রকট হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, কুমারগাঁও পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়াই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মূল কারণ। তবে এই বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ভেতরে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলছে ট্রান্সফরমারে ত্রুটি হয়েছে, কেউ বলছে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্টেশনটি বন্ধ রাখা হয়েছে। এর মাঝে স্টেশনের প্রধান প্রকৌশলীও অবসরে চলে গেছেন, ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কবে নাগাদ পাওয়ার স্টেশনটি সচল হবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আনতে হয়, এবং এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। ততদিন পর্যন্ত সিলেটে বিদ্যুৎ বিভ্রাট অব্যাহত থাকতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এই পরিস্থিতি নিয়ে। কেউ কেউ বিদ্যুৎ বিভাগের হটলাইনে ফোন করে ভর্ৎসনা করছেন। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, তারা পরিস্থিতির বাইরে থেকে চাপের মুখে পড়ছেন, যদিও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের দায় তাদের হাতে নেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কুমারগাঁওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশনটি দ্রুত চালু করা না গেলে সিলেট শহরের বিদ্যুৎ সংকট দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। পাশাপাশি জাতীয় গ্রিড থেকেও চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, না হলে শহরের জনজীবনে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।